. দলিত-মুসলিম ভাই ভাই
বর্ণহিন্দুর রক্ত চাই।
দশটা মিনিট ব্যায় করে ইতিহাসকে জানুন। ভবিষ্যতকে দেখতে পাবেন।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~.
গত কিছু দিন ভারতের কিছু স্থানে 'দলিত'দের উপর বেশ কিছু অত্যাচারের ঘটনা ঘটেছে। এই ধরনের অমানবিক ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যে জলভাত হলেও কোনো সভ্য সমাজে চলতে পারে না। এর ফলশ্রুতিতে বেশ কিছুদিন ধরে রাজনীতি সচেতন জনসমাজে দলিতপ্রেম জেগেছে। দলিতরা যে বর্ণহিন্দুদের দ্বারা কতটা নির্যাতিত হয়ে চলেছে আবহমান কাল ধরে, তার হিসাব নিকাশ চলছে। তার সাথে চলছে উপদেশের অমৃতবার্তা। ব্রাহ্মন তথা সকল উচ্চবর্ণের উদ্দেশ্যে চলছে অশ্রাব্য গালিগালাজ। তাদের বিতাড়নের উস্কানিও দেওয়া হচ্ছে। দলিত ও মুসলিমদের একত্র করে "শ্রেনীহীন সমাজ" গঠনের স্বপ্নও দেখান হচ্ছে।
যা ঘটেছে তা ক্ষমার অযোগ্য। হিন্দু সমাজে যখনই এরকম ঘটনা ঘটে, তার প্রতিকারও হয়। কিন্তু কিছু সবজান্তা স্বার্থান্ধ ব্যাক্তি এই সুযোগে হিন্দু সমাজে বিভাজন ঘটানোর জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। সাধারন মানুষের স্মৃতিশক্তির দূর্বলতা এদের প্রধান অস্ত্র। ইতিহাসের পাতায় এদের কাহিনী কালিমালিপ্ত।
===============================
যোগেন মন্ডলের করুণ কাহিনী শুনুন :-
যোগেন মন্ডল ছিলেন নমঃশুদ্র জাতের অর্থাৎ পূর্ব বঙ্গের নিম্নজাতির লোকেদের সব থেকে বড় নেতা। নমঃশুদ্রদের কাছে ওনার কথাই ছিল শেষ কথা।
দেশ ভাগের সময় উনি বললেন - "আমার কোন নমঃশূদ্র ভাই হিন্দুস্তানে যাবে না।... পাকিস্তান দিতে হবে.... দিতে হবে। - এই পাকিস্তানে আমরা পাকিস্তানীরা আর নমঃশূদ্ররা ( তিনি নমঃশূদ্রদের হিন্দু বলেই মনে করতেন না ) ভাই-ভাই হয়েই থাকব। হিন্দুদের সঙ্গে থাকব না।দেখবেন, আমাদের কোন অসুবিধা হবে না"। বাংলাদেশে আওয়াজ উঠল -
" নমঃশুদ্র-মুসলিম ভাইভাই
বর্ণহিন্দুর রক্ত চাই"।
পাকিস্তানের জন্ম হল, যোগেন্দ্র নাথ মন্ডল পাকিস্তানের আইন মন্ত্রী হয়ে বসলেন -- এই পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই চলল। কিন্তু তারপরেই শুরু হল মহা গন্ডগোল...!!
পাকিস্তান হওয়ার ঠিক পরে অর্থাৎ - 1947 এর 15 অগাস্টের পর থেকেই হিন্দুদের উপরে নেমে এলো অমানুষিক অত্যাচার।বিশেষ করে, 50 এর ফেব্রুয়ারির পর থেকে - সব থেকে বেশী অত্যাচার নেমে এলো গরীব নমঃশূদ্র জাতের উপরে। কারন ততদিনে উচ্চবর্নের হিন্দু হয় বর্ডার ক্রস করে পালিয়েছেন, নয় মরেছেন অথবা কিছু তরবারীর সামনে কলেমা পড়ে মুসলমান হয়েছেন। অতএব হাতের পাঁচ - নমঃশুদ্র জাতের মেয়ে বউদের উপরে ধর্ষন সব সীমা ছাড়িয়ে গেল।
দক্ষিণ বাংলাদেশের ভোলা দ্বীপে নমঃশুদ্র জেলে মেয়েদের আট থেকে সত্তর বছর বয়স্ক প্রায় দুই হাজার মেয়ে বউকে একদিন দুপুরে রেপ করা হল একই সাথে মাঠে শুইয়ে।
সর্বত্র হিন্দু মেয়ে বউদের উপরে বিশেষ করে তপশিলী মেয়ে বউদের তাঁদের বাড়ির উঠোনেই রেপ করা হতে লাগল - আবার রাতের বেলা শিশু পুত্র কে মেরে ফেলা হবে এই ভয় দেখিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হতে লাগল -- রাত দশটায় নিয়ে যাওয়া হতে লাগলো আর ফেরত দিতে লাগল ভোরের বেলা - স্বামী পুত্রের প্রাণ রক্ষায় তপশীলি মেয়ে বউরা তাই করতে লাগল।
যোগেন্দ্র নাথ মন্ডলের ছিল দুই মেয়ে আর বউ। তাদের নিয়ে তাঁর প্রাণপ্রিয় নমঃশূদ্র গরীব ভাই বোনেদের পিছনে রেখে, নমঃশুদ্র মেয়ে বউদের হায়নার মুখে রেখে, তিনি পালালেন কলকাতায়... সেই হিন্দুদের কাছে, ... সেই হিন্দুস্থানের মাটিতে। .. যা এককালে তাঁর কাছে চক্ষুশূল ছিল।
পড়ে রইল তাঁর প্রায় দেড় কোটি অত্যন্ত গরীব নমঃশূদ্র জাতের ভাই বোনেরা যারা তার কথা শুনে ১৯৪৭ এ দেশভাগের সময়েও ভারতে আসার সুযোগ থাকা স্বত্বেও ভারতে আসেননি।
অবশেষে, তিনি তাঁর অভিজ্ঞতা দিয়ে বুঝলেন -
"ঐ দেশে ( পুর্ব পাকিস্থান/ অধুনা বাংলাদেশ) আর হিন্দু থাকতে পারবে না"...।
সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলছে।
ভাবুন একবার, একটি দেশের এক আইন মন্ত্রী শুধুমাত্র হিন্দু হবার কারনে প্রান ভয়ে রাতের অন্ধকারে অন্য একটি দেশে পালিয়ে গিয়ে সেখান থেকে তৎকালীন পাকিস্থানের প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান'কে তাঁর পদত্যাগ পত্র পাঠিয়ে দিচ্ছেন!
এই হল সেকুলার বিপ্লব। আর - এই হোল এদের বিচার আর চিন্তা ধারা। বর্তমানের দিকভ্রষ্ট রাজনীতির দলিত- মুসলিম ঐক্যের এক উজ্জ্বল এবং আদর্শ উদাহরন পঞ্চাশের দশকের এই যোগেন্দ্র নাথ মন্ডল ।
▶ যোগেন মন্ডলের ইতিহাসটি আংশিক সংগৃহীত।
No comments:
Post a Comment