Wednesday, 24 June 2015

আফগানিস্তানে শকুনি মামার রাজ্য…

আফগানিস্তানে শকুনি মামার রাজ্য… বাংলা ব্যাকরণের বাগধারায় একটি শব্দের সাথে আপনারা নিশ্চয়ই পরিচিত থাকবেন । ‘শকুনি মামা’ যার অর্থ ‘কুটবুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তি’ । কিন্তু শকুনি মামার বাগধারায় এর অর্থ কুটবুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তি দেয়ার নিশ্চয় একটি কারণ রয়েছে । কেননা সনাতন ধর্মের অন্যতম শাস্ত্র মহাভারতে এ শকুনি মামার কুটবুদ্ধিতার কারনে পুরো মহাভারত এতটা সম্প্রসারিত রূপ ধারণ করে । এই কুটবুদ্ধিসম্পন্ন শকুনি মামাকে মহাভারতের প্রধান চরিত্র হিসেবেও আখ্যা দেয়া হয় । নানা রকমে কুটিলতায় ভরপুর এ শকুনি মামার ভাবার্থ তাই বাগধারায় কুটবুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় । তবে আশ্চর্য হলেও সত্য যে, একাধিক প্রামাণিকতা থাকা সত্ত্বেও মহাভারতের এই কাহিনীসমূহকে অনেকেই বিশ্বাস করতে নারাজ হয় । ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মহাভারতের অভূতপূর্ব লীলাবিলাস স্থানসমূহ এখনও ভারতের বিভিন্ন স্থানে মহাতীর্থ হিসেবে শোভা পাচ্ছে । মহাভারতে উল্লেখিত শকুনি মামার রাজ্য ছিল এখনকার আফগানিস্তানে । আফগানিস্তানের কান্দাহার শহরটিই শকুনি মামার রাজ্য ছিল । শুধু তাই নয় আফগানিস্তানে এখনও পর্যন্ত মহাভারত সময়কালীন অনেক প্রাচীন হিন্দু মন্দির অবস্থিত । পূর্বে আফগানিস্তান শাসন করত হিন্দু শাহী রাজারা । তারা দশম শতাব্দী পর্যন্ত এই সনাতন ধর্মকে টিকিয়ে রেখেছিলেন । কিন্তু পরবর্তীতে ইসলামের অভ্যুথানের সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে ঐ দেশের প্রধান ধর্ম হিসেবে ইসলাম ধর্ম স্বীকৃতি লাভ করে । দেশটিতে এখনও পর্যন্ত অনেক সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বাস করে । যাদের অনেকেই বংশগত পরম্পরায় এখনও পর্যন্ত টিকে রয়েছে । তবে মূলত মুসলমান প্রধান দেশ হওয়ায় এসব সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের সনাতন ভাবধারা টিকিয়ে রাখার চেষ্টায় রত । আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ ইস্কনও সনাতন ধর্মের অতি প্রাচীন সংস্কৃতি কৃষ্ণভাবনামৃত প্রচার করার প্রয়াস চালাচ্ছে । সনাতনী সম্প্রদায়ের অধিকাংশই বাস করে আফগানিস্তানের কাবুল এবং কান্দাহারে । হিন্দু শাহী রাজাদের আমলে ‘কাবুল’ ছিল তখন প্রধান রাজধানী । বৈদিক সংস্কৃতির ঐতিহ্য হিসেবে তখন শাহী রাজাদের আমলে প্রচলিত স্বর্নের দিনারে দেবাদিদেব শিবের মনোগ্রাম স্থাপিত ছিল ।শাহী রাজা কিংগালের আমলে ৫ম শতাব্দিতে স্থাপিত শ্রী গণেশের মূর্তিও অবস্থিত যেটি আফগানিস্তানের গার্ডেজে দেখতে পাওয়া যেত । তবে এখন মূর্তিটি কাবুলের দার্গ পীর রঞ্জন নাথ নামক স্থানে স্থাপিত রয়েছে । যদিও মূর্তির বিভিন্ন অংশ প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে । এই স্থানটিতেও অনেক হিন্দু মন্দির রয়েছে । কান্দাহারের শিখাপুর বাজার, কাবুলি বাজার, যাম্পীর সাহীব এবং দেবী দেওয়ার, চাসমা সাহীব, সুলতানপুর, জালালাবাদ, ঘজনী, হেলমান্ত(লম্বারগ) এবং কুন্তজ নামক আঞ্চলেও অনেক প্রাচীন হিন্দু মন্দিরের নিদর্শন পাওয়া যায় । আফগানিস্তানের এসব প্রাচীন নিদর্শনসমূহ ও শকুনি মামার রাজ্যের প্রাচীন সংস্কৃতিসমূহ থেকে আমাদের এটি উপলব্ধি করতে বাধ্য করে যে, সনাতন ধর্মের সংস্কৃতি বহু প্রাচীন এবং মহাভারতের কাহিনীসমূহ কাল্পনিক নয় বরঞ্চ চির শাশ্বত ও বাস্তব । যার প্রমাণ আফগানিস্তানের এ নিদর্শনসমূহ । written by susanta banda

No comments:

Post a Comment