"নিজে শান্ত না হইলে কখনও শান্তি
পাওয়া যায় না। মানুষ শান্তিই
খুঁজিয়া বেড়ায়, কিন্তু কি কৌশলে যে
উহাকে লাভ করিতে হয় তাহা জানে
না। ভাল মন্দ, জয় পরাজয় লইয়া
থাকিলে কামনা বাসনা দূর হয় না
এবং চিত্তের উদ্বেগ ও দৈন্য
অপসারিত হয় না ইহার ফলে চিরদিন
হাহাকার ও ছুটাছুটি করিয়াই
অামাদিগকে বেড়াইতে হয়। কেমন
করিয়া প্রকৃত শান্তি লাভ করা যায়,
কেমন করিয়া জন্মজন্মান্তরেরজ্বলা
জুড়াইতে পারা যায়-এই প্রশ্ন স্বতঃই
অামাদের মনে উদিত হয়। কিন্তু কয়জন
ইহার মীমাংসা করিতে পারিয়াছেন?
তিনি বলেন-নিত্য বস্তু বা স্বভাবের
সঙ্গ না করিলে দুঃখের হাত হইতে
এড়াইবার অার অন্য উপায় নাই।
নিজের কর্তৃত্ববুদ্ধি একেবারে
বিসর্জন করিতে না পারিলে শান্তি
লাভ করা অসম্ভব। বিত্য বস্তু কি?
যাহাকে কোনও প্রকারে ত্যাগ করা না
তাহাই নিত্য। যাহাকে ধরিয়া
থাকিলে পাপ তাপ, দুঃখ যন্ত্রণা ভয়ে
পালাইয়া যায় তাহাই নিত্য। এই
নিত্যের সেবা করাই ধর্ম্ম। প্রাণ
নিত্য, যে-হেতু তাহাকে ছাড়িয়া এক
মুহূর্তও থাকা চলে না। যে প্রাণ
জগতের অাশ্রয় এবং যাহার ক্রিয়া বা
স্পন্দনের বিরাম নাই, সেই
প্রত্যক্ষসিদ্ধ প্রাণদেবতার সঙ্গ
করিতে হয়। একটা কিছু অাশ্রয় বা
অবলম্বন না করিয়া সাধন-ভজনে
অগ্রসর হওয়া যায় না। কাজেই যিনি
সকলের অাশ্রয়, সর্বভুতের প্রাণ এবং
সর্বব্যাপক তাঁহারই অাশ্রয় গ্রহণ
করিতে হয়। এই জন্যই বৈষ্ণবেরা
বলেন- 'অাশ্রয় লইয়া ভজে তারে কৃষ্ণ
নাহি ত্যজে। সর্বাশ্রয় ভগবানের কথা
তিনি অনেক সময় বলিয়া থাকেন। এই
অাশ্রয়কেই উপনিষদে বলা হইয়াছে,
সর্বলোক -প্রতিষ্ঠা'।"
-অধ্যাপক প্রঁভাআ চন্দ্র চক্রবর্তী,
(এম, এ; পি, অার, এস; পি, এইচ, ডি,
লিখিত)।
No comments:
Post a Comment