আপনারা জানেন, সম্প্রতি ভারতে এক জনগণনার ফল প্রকাশিত হয়েছে। দেখা গেছে, ভারতে হিন্দু এবং অন্যান্য সম্প্রদায়ের চেয়ে মুসলমানদের সংখ্যা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারত ভাগের পর থেকে আজ পর্যন্ত এমন কোনো জরিপের দেখা মেলেনি যেখানে মুসলমানদের গ্রোথ নিন্মমূখী। ভারতে কেন এভাবে মুসলমানদের সংখ্যা বেড়ে চলেছে তার কারণগুলি কারো অজানা নয়। যদিও সমস্যার সমাধানে কারো কোনো বিশেষ তৎপরতা এখনো পর্যন্ত লক্ষ্য করা যায়নি। উল্লেখিত যে জনগণনার ফলাফল নিয়ে আমরা আলোচনা করছি, সেটা ২০১১ এর হিসাব। সেই হিসাব মতে, মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার সর্বাধিক পশ্চিমবঙ্গরাজ্যে। ইতিমধ্যে রাজ্যের তিনটি জেলা এখন মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ।
এই জনগণনার রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার বিষয়ে আনন্দবাজারের সম্পাদকীয় পৃষ্ঠায় অমিতাভ গুপ্ত বিরাট কলাম লিখেছেন। "সহজ ছবিটা নষ্ট চোখে না দেখলেই নয়?" শিরোনামে সেখানে তিনি অনেক প্রশ্ন রেখে গেছেন এবং অনেক মন্তব্যও করেছেন।
http://www.anandabazar.com/editorial/hindutva-supporters-busy-in-propaganda-against-muslim-population-hike-1.198771#
তার দাবি, বিহারের নির্বাচন ঘিরেই নাকি এমন জনগণনার রিপোর্ট হঠাৎ প্রকাশ করা হল; যাতে করে বিজেপি হিন্দু ভোটার টানতে পারে। এই বিশাল ভারতবর্ষে প্রতি ছ'মাস অন্তর কোথাও না কোথাও নির্বাচন হয়। সারা বছরই নির্বাচনের তোড়জোড় চলে। তাই অমিতাভ গুপ্তের এই দাবির সাথে আমি একমত হতে পারলাম না। অমিতাভ তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে হিন্দুত্ববাদীদের উপর নানান কুযুক্তি দিয়ে দায় চাপিয়েছেন। সেসব নোংরা ঘাটার মত সময় আমার নেই। আমি কেবল তার একটা প্রশ্নের অতি সংক্ষিপ্ত উত্তর দিতে চাই। অমিতাভ আনন্দবাজারে তার লেখা কলামে সাংঘাতিক একটা প্রশ্ন করেছেন। তিনি প্রশ্ন করেছেন, """"""""ভারতে হিন্দুর বদলে মুসলিম সংখ্যাগুরু হলে কি ক্ষতি!!"""""""""
আপনারা হয়তো ভারত ভাগের কারণটা ভুলে যাননি। যদিও সেটা ভোলানোর চেষ্টার কোনো কমতি লক্ষ্য করি না। ভারতে মুসলমান সংখ্যাগুরু হলে কি হবে? তার আগে নিজেকে একবার প্রশ্ন করুন, পশ্চিমবঙ্গে মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ হলে কোথায় পালাবেন? পশ্চিমবঙ্গের আজ প্রায় চল্লিশ শতাংশ মানুষই উদ্বাস্তু। কেন এই উদ্বাস্তুরা পূর্ববঙ্গ থেকে পালিয়ে এলো? পশ্চিমবঙ্গে মুসলমান সংখ্যাগুরু হলে রাজ্যের অবস্থা ঐ কাশ্মীরের মত হবে না তার গ্যারান্টি কি? খাগড়াগড় কাণ্ডের পরেও কি অন্ধ বিশ্বাস রাখতে পারবেন? পশ্চিমবঙ্গে হিন্দু সংখ্যালঘু হলে সোহরাওয়ার্দীর মত কোনো মুসলমান নেতা আবারো বাংলার মূখ্যমন্ত্রী হবে। কলকাতা ও নোয়াখালী দাঙ্গার মাস্টারমাইন্ড অখণ্ড বাংলার মূখ্যমন্ত্রীর মত এই পশ্চিমবঙ্গে আবারো দাঙ্গা লাগিয়ে হিন্দু নিশ্চিহ্ন করে ফেলা হবে। দেখা যাবে, সিদ্দিকুল্লা, ইমরানদের মত মৌলবাদী নেতা কিংবা শাহী মসজিদের ইমাম হবেন রাজ্যের ভবিষ্যত মূখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ জেলাগুলির দিকে দৃষ্টি দিন। মুর্শিদাবাদে আজ হিন্দুদের পুজোয় বাঁধা দিচ্ছে মুসলমানরা। মালদা, মুর্শিদাবাদ যেখানেই মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ সেখান থেকে হিন্দুরা পালিয়ে যাচ্ছে। পালিয়ে বেড়ানোর অভিশাপ থেকে বাঙালী হিন্দু আজও মুক্তি পায়নি। পাড়া, মহল্লা, গ্রাম, মফস্বল শহরগুলোতে এভাবে একছত্র আধিপত্য বিস্তার করে চলেছে মুসলমানরা; যেখানে হিন্দুর বসবাসের কোনো পরিবেশ নেই।
ভারত পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র। ভারত রাষ্ট্র কে ঘিরে আছে অসংখ্য ছোট বড় মুসলিম রাষ্ট্র। পাকিস্তান থেকে শুরু করে পুচকে বাংলাদেশ সবাই ভারত কে শত্রু মান্য করে। এমনকি মালদ্বীপ; যে ছোট দেশটি ভারতের দয়ার উপর চলে তারাও সুযোগ পেলে ভারতের অনিষ্ঠ করতে ছাড়ে না। আজ ভারত যদি মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ হয় তবে পুরো দক্ষিণ এশিয়া মুসলমানদের কব্জায় চলে যাবে। এখন অমিতাভদের মত মানুষ প্রশ্ন করবে, দক্ষিণ এশিয়াতে যদি মুসলমানরা একছত্র আধিপত্য বিস্তারে সফল হয় তবে ক্ষতি কি?
পৃথিবীতে ৫০ এর অধিক মুসলিম দেশ রয়েছে; যাদের মধ্যে কেবল পাকিস্তানের পারমাণবিক শক্তি রয়েছে। এক পাকিস্তানের ভরসায় একের পর এক নিত্য নতুন জঙ্গিগোষ্ঠী গড়ে উঠছে। তবে ভারত যদি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে তবে অবস্থা কি দাড়াবে চিন্তা করেছেন কি? কেবল হিন্দুর স্বার্থে নয়; বিশ্ব কে সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদের থেকে বাঁচাতে ভারতে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখার বিকল্প আছে কি? প্রশ্ন রইল অমিতাভ গুপ্তদের কাছে!
No comments:
Post a Comment