Friday, 21 August 2015

The Hindu

'হিন্দু' শব্দ সম্পূর্ণ অসাম্প্রদায়িক। হিন্দু বলে কোনও একক বা আলাদা কিছু ধর্মমত নেই, সম্প্রদায় নেই। তাই হিন্দু নামে কোন আলাদা শাস্ত্র ও নেই। এমনকি সুপ্রাচীন বৈদিক শাস্ত্রে বা রামায়ণ মহাভারাতাদী পুরাণে এ নামের কোন উল্লেখ ও নেই। এ নাম পরবর্তী কালের বাস্তব মুল্যায়্নেরই ফলশ্রুতি, এতে সন্দেহ নেই। তাই পরবর্তীকালের শাস্ত্রে এই শব্দ পেয়ছে যথার্থ মর্যাদার স্থান। কারণ, এ শব্দ সম্প্রদায়ের ঊর্ধে থেকে সকল সমভাবাপন্ন সম্প্রদায়কে ব্যক্ত করে। হিন্দু শব্দের শব্দার্থ ও অতি উত্তম। প্রাজ্ঞ পন্ডিত সকলের মত অনুযায়ী - "হীনং দূষয়তি স হিন্দুঃ" অথবা "হীনং দূরয়তি স হিন্দুঃ" অর্থাত হীনতাকে যে বর্জন করে সেই হিন্দু। হিন্দু একটি সদগুণবাচক শব্দ। সদগুণমন্ডিত উচ্চচিন্তায় রত দিব্য সংস্কৃতি যুক্ত জাতিই হিন্দুজাতি। এর গুণমানই স্বামী বিবেকানন্দ কে উদ্বুদ্ধ করেছিল নিজেকে 'হিন্দু' বলে পরিচয় দিয়ে গর্ব অনুভব করতে। বিবেকানন্দ বলেছেন, " এখন আমাদের একদিকে প্রাচীন হিন্দুসমাজ, অপর দিকে আধুনিক ইউরোপীয় সভ্যতা। এই দুটির মধ্যে আমি প্রাচীন হিন্দুসমাজকেই বাছিয়া লইব। কারণ, সেকালের হিন্দু অজ্ঞ হইলেও, কুসংস্কারাছন্ন হইলেও তাহার একটা বিশ্বাস আছে - সেই জোরে সে নিজের পায়ে দাঁড়াইতে পারে। কিন্তু পাশ্চাত্যভাবাপন্ন ব্যক্তি একেবারে মেরুদন্ডহীন, সে চারিদিক হইতে কতকগুলি এলোমেলো ভাব পাইয়াছে - তাহাদের মধ্যে কোন সামঞ্জস্য নাই, শৃঙ্খলা নাই।" "একটি কথা মনে রাখিও - তোমরা যখন হিন্দু, তখন তোমরা যাহা কিছু শিক্ষা কর না কেন, তাহাই যেন তোমাদের জাতীয় জীবনের মূল মন্ত্রস্বরুপ ধর্মের নিম্নে স্থান গ্রহণ করে।" "....শিক্ষাই বলিস আর দীক্ষাই বলিস, ধর্মহীন হলে তাতে গলদ থাকবেই থাকবে।" ....."ভারতে যে কোনও সংস্কার বা উন্নতির চেষ্টা করা হোক, প্রথমতঃ ধর্মের উন্নতি আবশ্যক। ভারতকে সামাজিক ও রাজনীতিক ভাবে প্লাবিত করার আগে, প্রথমে আধ্যাত্মিক ভাবে প্লাবিত কর। প্রথমেই এইটি করা আবশ্যক।" কার্যপ্রণালীর কথা বলতে গিয়ে বিবেকানন্দ বলেছেন, - "একটি সংঘের বিশেষ প্রয়োজন - যা হিন্দুদের পরস্পর পরস্পরকে সাহায্য করতে ও ভালো ভাবগুলির আদর করতে শেখাবে। আমার কার্যপ্রণালী - হিন্দুদের দেখানো যে, তাহাদিগকে কিছুই ছাড়িতে হইবে না, কেবল ঋষি প্রদর্শিত পথে চলিতে হইবে ও শত শত শতাব্দীব্যাপী দাসত্বের ফলস্বরূপ এই জড়ত্ব দূর করিতে হইবে।.....এখন আমাদিগকে সন্মুখে অগ্রসর হইতেই হইবে - স্বধর্মত্যাগী ও মিশনারিগণ উপদিষ্ট ধ্বংসের পথে নয়, আমাদের নিজেদের ভাবে নিজেদের পথে। প্রাসাদের গঠন অসম্পূর্ণ বলিয়াই উহা বীভত্স দেখাইতেছে। শত শত শতাব্দীর অত্যাচারে প্রাসাদ নির্মাণ বন্ধ রাখিতে হইয়াছিল। এখন নির্মাণ কার্য শেষ করা হউক, তাহা হইলে সবই যথাস্থানে সুন্দর দেখাইবে।" Animitra Chakraborty

No comments:

Post a Comment