Friday, 2 October 2015

মুসলিমকে গো-হত্যার মিথ্যা অভিযোগে পিটিয়ে মারা হয়েছে বলে অনেক কথা বলা হচ্ছে..

যেখানে উত্তরপ্রদেশে একটা মুসলিমকে গো-হত্যার মিথ্যা অভিযোগে পিটিয়ে মারা হয়েছে বলে অনেক কথা বলা হচ্ছে.. কিছু হিন্দুকেও দেখলাম নিজের ধর্ম নিয়ে বাজে কথা বলছে.. RSS, BJP, VHP, হিন্দু সংগঠনকে নিয়েও অনেক বাজে কথা বলছে.. আমি তাদের নাম না করে তাদের উদ্দেশ্যে শুধু একটা প্রশ্ন করতে চাই.. তোমরা আদৌ তোমাদের ধর্মকে ভালোবাসো তো?? দেখো Secularism কে সাপোর্ট করা খারাপ না.. কিন্তু সেই সাপোর্টটা সব ধর্মের ক্ষেত্রে সমান হওয়া চাই.. তবেই তাকে বলে ধর্মনিরপেক্ষতা.. এই যে মুসলিমদের হয়ে এত কথা বলছো.. যখন হিন্দু ধর্মের ওপর আঘাত হানা হয় তখন কটা মুসলিম হিন্দু ধর্মের হয়ে কথা বলে?? গনতান্ত্রীক দেশ.....কোন দেশটাকে গনতান্ত্রীক দেশ বলতে চাইছো......যেখানে উস্তি, রাজাবাজার, ক্যানিং এর হিন্দু পেটানোর খবর চেপে যাওয়া হয়.....নদিয়ায় তিনজন বৈষ্ণবকে মুসলিমরা পিটিয়ে মেরে ফেলল তখন কোথায় ছিলো তোমার ধর্ম নিরপেক্ষতা?? .....আজ মুর্শিদাবাদের অবস্থাটা দেখেছো একবার, কোনও হিন্দু সেখানে স্বাধীনভাবে বাঁচতে পারছে না.....যেখানে মালদায় মহিলা রাজ্য ফুটবল খেলা বন্ধ করে দেওয়া হয় ফতোয়া দিয়ে......যেদেশে কাশ্মীর নামক একটি রাজ্যে হিন্দু নিধন চলে অথচ আমরা চোখে কিছু দেখি না.....মুসলিম জঙ্গি বুক ফুলিয়ে অবজ্ঞার সুরে বলে " হিন্দুওকো মাড়নে মে বহুত মজা আতা হ্যায় ".......যেখানে মুসলিম নেতা আকবর উদ্দিন ওয়েসী উন্মাদ মুসলিম জনসভায় বির দর্ভে ঘোষনা করে যে 15 মিনিট সময় পেলে 100 কোটি হিন্দু কোতল করে দেবো.......লাইক পাবার জন্য আমরা অনেক সত্যকে লুকিয়ে ফেলি.....এটাই হলো নির্লজ্জ সেকুলারিজম.....গো-হত্যার কথা বলছিলে না?? আমি বলছি তোমাকে আমাদের ধর্মে গোরুর প্রয়োজনিয়তা.. এমন একটা সময় ছিলো যখন এদেশের প্রতিটি অঞ্চলে তথা গ্রাম বাংলার কোন পরিবারই গরুহীন ছিলো না। প্রায় প্রতিটি পরিবারের এক বা একাধিক গরু এবং গরু রাখার গরুঘর, বাড়ী সামনে বা পেছনে খড়ের চিন শোভা পেত। সম্ভবতঃ বছর ত্রিশ কিংবা পঁয়ত্রিশেক আগেও কম বেশী এধরনের অবস্হা দেখা যেত। আজ আর সে রকম দেখা যায় না। তবে সমাজের প্রতিটি পরিবারে গরু গুলোর মধ্যে গ্রামের হিন্দু পরিবারের গরুগুলি অধিক যত্ন আত্তি পেত। যত্ন বললে ভুল হবে, বলা যায় নিয়মিত পূজা পেত। আমি আমার মা ঠাকুমাকে দেখতাম প্রতিদিন সন্ধ্যায় গরুর পা শুদ্ধ জল ধুঁইয়ে দিতে, গরুর গায়ে ও ঘরে ধূপ দিতে গরুকে প্রনাম করতে। এছাড়াও বিশেষ বিশেষ দিনে গরুর পা ধুইয়ে কপালে সিঁদুরের ফোঁটা ও গায়ে চালের গুঁড়োর ছাপ দেয়া হতো। নতুন ধানের চাল গুঁড়োর পিঠা বানিয়ে গরুকে খাওয়ানো হতো এবং নিজেদেরও খাওয়া হতো। হিন্দুবাড়ীতে নতুন গরু কিনে আনার পর পা ধুইয়ে সিঁদুরের ফোটা দেওয়া হত। চৈত্র সংক্রান্তিতে পরিবারের বাচ্চাদের নতুন জামা কাগড়ের সাথে গরুর জন্য কেনা কিংবা তৈরী করা হতো নতুন দঁড়ি। এভাবে গরুর প্রতি যথাযথ সম্মান দেখানো হত বলেই হিন্দুরা বংশ পরম্পরায় আজও তাদের গো-মাতাকে সম্মান দিয়ে আসছে.... সনাতনী সংস্কৃতিতে (১) গরু, (২) সংস্কৃত ভাষা (দেবভাষা) ও গীতা – এতিনটি সব সময় গুরুত্বপূর্ণ ও বিশেষ স্হান দখল করে আছে। বলা হয়ে থাকে ভগবান বিষ্ঞুর বাহন গোমাতা (গাভী)। অন্যদিকে শিবের বাহন বৃষ (ষাড়), মূলতঃ একারণেই গরুকে সম্মানের চোখে দেখা হয়। শাস্ত্রীয় মতে দুগ্ধবতী গাভীকে মনে করা হয় **‘মাতরঃ সর্বভূতানাং গাবঃ সর্বসুখপ্রদাঃ’ অর্থাৎ সর্বভূতের মাতা বলে। চৈতন্যদেব গরু বিষয় বলেছেন – **‘গো দুগ্ধ খাও তাই গাভী তব মাতা। বৃষ অন্ন উপজায় তাহে তেহ পিতা’।..... **“বেদ, উপনিষদ, রামায়ণ, মহাভারত, পুরাণ, স্মৃতি সকল শাস্ত্রে গোজাতির প্রতি অসাধারণ সম্মান প্রদর্শন করা হয়েছে।..... তবে এদেশের মূল সমস্যা হলো দেশে গরু পালন গনহারে কমে গেছে। এদেশের আজ থেকে ৩০-৩৪ বছর আগের তুলনায় বর্তমানে মাত্র ১০ ভাগ গরুও অবশিষ্ট নেই বিধায় এক্ষেত্রে বড় বাঁধা।.... গরুর প্রতি হিন্দু সম্প্রদায়ের এধরনের সম্মান, শ্রদ্ধার ধর্মীয় কারণ বলা হলেও মূলতঃ এর অর্ন্তনিহিত কারণ বৈজ্ঞানিক ও প্রয়োগিক কারণ।.... এককথায় মানুষের খাদ্য সরবরাহের তথা কৃষিজ উৎপাদন, সুষম পুষ্টি যুক্ত খাদ্যের যোগান, সবোর্পরি প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় গো সম্পদের অবদান অপরিহার্য। মূলতঃ এসব কারণে আদি ঋষিগন গোসম্পদ নিধন করার পরিবর্তে রক্ষায় ও প্রকৃতিতে এর উত্তরোত্তর বৃদ্ধির লক্ষ্যে তাদের অনুসারীদের নানা ভাবে নিদের্শ দিয়ে গেছেন এভাবে – গরুকে স্পর্শ করলে পাপ দূর হয়, গরুর সেবা করলে বিত্তলাভ হয়, গো-দান করলে স্বর্গলাভ হয়; গরুর মস্তকে ব্রহ্মা, স্কন্ধে শিব, পৃষ্ঠে নারায়ণ এবং চরণে বেদ সমূহ অবস্থান করেন। গাভীর লোমে অন্যান্য দেবতারা অবস্থান করেন। আমি হিন্দুধর্ম নিয়ে গবেষণা করি.. হিন্দুধর্মকে আমি শ্রদ্ধার চোখে দেখি.. তাই হিন্দুধর্ম নিয়ে কেউ বাজে কথা বললে কষ্ট হয়.. গো-মাতাকে নিয়ে আমাদের একটা আবেগ আছে যার জন্য আমরা হিন্দুরা গো- হত্যার প্রতিবাদ করি... হিন্দু ধর্মকে তোমরা সাপোর্ট করবে কিনা, গো-হত্যার প্রতিবাদ করবে কিনা তোমাদের ব্যাপার.. তবে একটা কথা মনে রেখো Secularism কে সাপোর্ট করছো ভালো কথা কিন্তু পরে এমন সময় না আসে যে তোমাদের নিজেদের ধর্মের লোক তোমায় সাপোর্ট করবে না..

No comments:

Post a Comment