#সাম্যবাদ-৩
নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া কৈশোর - দীপু বিশ্বাস, তথ্যপ্রযুক্তি আইনে তাকে গ্রেফতার করেছে বাঙলাদেশের বীর পুলিশবাহিনী !
তার অপরাধ ফেসবুকে ইসলাম অবমাননা হয় এমন মন্তব্য করেছে সে ! এতে ভয়াবহভাবে আহত হয়েছে কতিপয় মানুষের ধর্মানুভূতি !!
নিচের অংশটুকু কষ্ট করে পড়ুন-
~
" ফেসবুকে দীপুর কথিত এক মন্তব্যে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ওই মন্তব্যে ‘ইসলামের অবমাননা হয়েছে’ অভিযোগ করে সন্ধ্যার পর সিংড়া বাজার থেকে মিছিল নিয়ে দিপুর বাড়িতে হামলা করতে যায় একদল লোক। এ সময় স্থানীয় সিংড়া ফাঁড়ি ও শালিখা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামাল দেয়। পুলিশ সুপার একেএম এহসানুল্লাহসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেখানে গিয়ে দিপুকে গ্রেফতার ও শাস্তির প্রতিশ্রুতি দিলে এলাকাবাসী শান্ত হয়।"
~
ছেলেটা কিছু একটা লিখেছে, মেনে নিলাম। মেনে নিলাম তার লেখা আপনাদের কষ্ট দিয়েছে, আপনাদের ধর্মানুভূতি আহত হয়েছে। কিন্তু আমার জিজ্ঞাসা,
"আপনারা কি শুধুই একেকজন মুসলিম? কখনো কি মুসলিম- ট্যাগটা সরিয়ে একজন সত্যিকার মানুষ হতে পেরেছেন?বা হতে চেয়েছেন?"
দীপু কেন এরকম লিখা লিখলো সে প্রসঙ্গে পরে আসছি। আগে বলি,
সাম্প্রদায়িকতারমতো এতো জটিল আর দুর্বোধ্য শব্দের অর্থ সম্পর্কে কিইবা বুঝে এই কিশোর ছেলেটা?
নিঃসন্দেহে সে নাস্তিক নয়, কারণ এই বয়সে নাস্তিকতার মতো একটা গুরুতর ধারণা বা মতবাদ সম্পর্কেও তার দক্ষতা থাকার কথা নয়।
তাহলে বলতে পারি অনেকটা বয়সের স্বাভাবিক উত্তেজক প্রতিক্রিয়া বা অপরিণামদর্শীতারফলই তার এই কথিত ইসলাম অবমাননা।
তাহলে এ কেমন সমাজ? এ কেমন মূল্যবোধ যা একটা অবুঝ কিশোরের একটা ভুলকে (ধরে নিলাম সে প্রকৃতপক্ষেই ভুল কিছু লিখেছিলো) মমতা আর উদারতায় ক্ষমা করে দিতে পারে না?
এ কেমন সমাজ যা অপ্রাপ্তবয়স্ক এক কিশোরের ক্ষেত্রে একটিবারের জন্য ধর্মান্ধতার শৃঙ্খল ছিড়ে "মানুষ" হয়ে উঠতে পারে না?
~
হাস্যকর লাগলো পড়ে যে এই তুচ্ছ ঘটনায় ওর বাড়িতে পর্যন্ত হামলা করতে গিয়েছিলেন বীর পুরুষেরা, অতঃপর প্রশাসন "শাস্তির"(!!!) নিশ্চয়তা দিলে তারা শান্ত হয় !
হায়্রে আমার সোনার সমাজ !!
.
এবার আসি দীপু বিশ্বাসদের উত্থান এবং তাদের এহেন ধর্ম অবমাননার কারণ প্রসঙ্গে ।
~
খুব সংক্ষেপে কোন প্রকার ভনিতা ছাড়া বললে বলতে হয়, আমাদের দেশে শত শত দীপু বিশ্বাস উত্থানের কারণ এই সমাজের লাখো কুৎসিত- বিকৃত, সাম্প্রদায়িক মনোভাবের মৌলবাদী শক্তি - যাদের একেকটা অংশকে আমরা "ফারাবি শফিউর রহমান" নামে চিনি!
-এই ফারাবি'রা প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে শত শত দীপু বিশ্বাসদের তৈরী করছে তাদের হিংসাত্মক আর নোংরা সাম্প্রদায়িক লেখনী দ্বারা!
আপনি একবার ফারাবিদের লেখা পড়েন, আমার কথার সত্যতা পাবেন।
এই সমাজ ফারাবিদের, তারা জানে তাদের শক্তির বাহার, জানে বাঙলাদেশ তাদের, আর তাই প্রত্যেকটা লেখায় যথেচ্ছভাবে অপমান করে চলেছে একটা নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে!
~
নাহ, রাষ্ট্রের সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করার ফুরসৎ নাই!
কেননা দীপুদের গ্রেফতার করে শেষ করা যায়, কিন্তু ফারাবিদের গুণেও শেষ করা যায় না!
দীপু বিশ্বাসের মতো একজন অবুঝ- অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোরকে গ্রেফতার করায় বোঝা গেলো রাষ্ট্রযন্ত্রে কি পরিমানে মরীচা জমে গেছে! এই রাষ্ট্রযন্ত্র সচল নয়, হতে পারে না; বিকল- অথর্ব এই রাষ্ট্রযন্ত্র!
এই রাষ্ট্রযন্ত্র অন্ধ, এরা সরলমনা দীপুদের চেনে,কিন্তু তাদের যারা সৃষ্টি করে; যারা তাদের নিষ্পাপ মনে হিংসার বীজ বপন করে ; হিন্দুদের "মালাউন" নামক ভুল আর বিকৃত শব্দে আক্রমণ করে, তাদের বিশ্বাসের মূল বস্তু-ঈশ্বর, দেবদেবীদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে যারা প্রতিনিয়ত হিন্দুদের অনুভূতিতে নির্দয়ের মতো আঘাত করে চলেছে সেই শফিউর ফারাবিদের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রযন্ত্র নির্বিকার - অলস- অকর্মণ্য !!
~
মাননীয় রাষ্ট্রযন্ত্র,
৫৭ ধারা কি শুধু হিন্দু আর নাস্তিকদের জন্য?
তাহলে এক কাজ করুন,সর্বাগ্রে ৫৭ ধারাকে জোরপূর্বক মুসলমানি করে মুসলমান করে নিন।।
কপি #অভিজিৎ
No comments:
Post a Comment