মুসলমানরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যীশু
একজন নবী ছাড়া আর কিছু নয়। কিন্তু
আসলে কোরান যীশুকে স্বয়ং ঈশ্বর ও
নবী উভয়ই বলছে। যা সম্পূর্ন অসার ও
স্ববিরোধী বক্তব্য।
প্রথমেই দেখি যীশু
সম্পর্কে কোরানে কি বলছে -
হে আহলে-কিতাবগণ! তোমরা দ্বীনের
ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করো না এবং
আল্লাহর শানে নিতান্ত সঙ্গত বিষয়
ছাড়া কোন কথা বলো না।
নিঃসন্দেহে মরিয়ম পুত্র মসীহ
ঈসা আল্লাহর রসূল এবং তাঁর বাণী
যা তিনি প্রেরণ করেছেন মরিয়মের নিকট
এবং রূহ-তাঁরই কাছ থেকে আগত। অতএব,
তোমরা আল্লাহকে এবং তার
রসূলগণকে মান্য কর। আর
একথা বলো না যে, আল্লাহ তিনের এক,
একথা পরিহার কর; তোমাদের মঙ্গল
হবে। নিঃসন্দেহে আল্লাহ একক উপাস্য।
সন্তান-সন্ততি হওয়াটা তাঁর যোগ্য
বিষয় নয়। যা কিছু আসমান সমূহ ও
যমীনে রয়েছে সবই তার। আর
কর্মবিধানে আল্লাহই যথেষ্ট।
# সূরা_নিসা-৪: ১৭১
উক্ত আয়াতে দেখা যাচ্ছে কোরান
যীশুকে আল্লাহর বানী ও আল্লাহর রুহু
হিসাবে বর্ণনা করছে।
আরবীতে যাকে বলে - আল্লাহর বানী =
কালিমাতুল্লাহ এবং আল্লাহর রুহু= রুহুল
আল্লাহ। প্রতিটি মুসলমানও কিন্তু
বিষয়টা স্বীকার করে। কিন্তু স্বীকার
করার পর এর নিহিতার্থ সম্পর্কে কিছুই
উপলব্ধি করতে পারে না। তা না পারার
কারনও কিন্তু কোরানের
স্ববিরোধী বিরোধী বানী।
এবার দেখা যাক তা ---
আর বণী ইসরাঈলদের জন্যে রসূল
হিসেবে তাকে মনোনীত করবেন।
তিনি বললেন নিশ্চয়ই আমি তোমাদের
নিকট তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ
থেকে এসেছি নিদর্শনসমূহ নিয়ে।
আমি তোমাদের জন্য মাটির
দ্বারা পাখীর আকৃতি তৈরী করে দেই।
তারপর তাতে যখন ফুৎকার প্রদান করি,
তখন তা উড়ন্ত পাখীতে পরিণত হয়ে যায়
আল্লাহর হুকুমে। আর আমি সুস্থ
করে তুলি জন্মান্ধকে এবং শ্বেত কুষ্ঠ
রোগীকে। আর আমি জীবিত করে দেই
মৃতকে আল্লাহর হুকুমে। আর
আমি তোমাদেরকে বলে দেই
যা তোমরা খেয়ে আস
এবং যা তোমরা ঘরে রেখে আস।
এতে প্রকৃষ্ট নিদর্শন রয়েছে,
যদি তোমরা বিশ্বাসী হও।
উক্ত আয়াতে বলছে যীশু একজন রসুল
ছাড়া আর কিছুই নয়। বলা বাহুল্য রসুল
হলো একজন মানুষ মাত্র যার
কাছে আল্লাহ সরাসরি বা কোন
ফিরিস্তার মাধ্যমে বানী পাঠায়
নিয়মিত।
এখন আমরা দেখি ঈশ্বর বা আল্লাহ
সম্পর্কে আমাদের ধারনা কি। ঈশ্বর
বা আল্লাহ হলো চিরন্তন ও শ্বাশ্বত।
তাই স্বাভাবিক ভাবেই তার বানী ও
আত্মাও চিরন্তন ও শ্বাশ্বত হবে। তার
বানী যদি শ্বাশ্বত ও চিরন্তন না হয় ,
তার আত্মা যদি শ্বাশ্বত ও চিরন্তন
না হয় তাহলে আল্লাহ বা ঈশ্বর চিরন্তন
ও শ্বাশ্বত হতে পারে না।সাধারন মানুষ
বা যে কোন রসুলের
বানী বা আত্মা হবে অবশ্যই নশ্বর ও
অস্থায়ী। এখন যীশু হলো আল্লাহর
বানী ও তার আত্মা যা কোরান
বলছে তাহলে সেই বানী ও
আত্মা হবে চিরন্তন ও শ্বাশ্বত। তার অর্থ
যীশু হলো চিরন্তন এক সত্তা। অথচ
চিরন্তন সত্তা একমাত্র ঈশ্বর
বা আল্লাহ। যার উপসংহার দাড়ায়
কোরান আসলে যীশুকে স্বয়ং ঈশ্বর
হিসাবেই স্বীকার করে নিচ্ছে। এ এমন
এক ঈশ্বর যে নাকি রক্ত মাংশের
আকারে দুনিয়াতে আগমন করেছিল
মানুষকে মুক্তির পথ দেখাতে। আল্লাহ
বা ঈশ্বর যেহেতু সব কিছু করতে সক্ষম
তাই তার পক্ষে রক্ত মাংশের মানুষ
আকারে পৃথিবীতে আসাও তার
পক্ষে নিতান্ত সাধারন ব্যাপার। অথচ
সেই একই কোরান পরেই আবার বলছে যীশু
হলো একজন রসুল মাত্র । আর বলা বাহুল্য ,
স্বয়ং ঈশ্বর ও রসুলের মধ্যে আকাশ
পাতাল তফাত। রসুল একজন মানুষ মাত্র।
তারা অর্থ খোদ কোরানই যীশু
সম্পর্কে উল্টা পাল্টা ও
স্ববিরোধী কথাবার্তা বলেছে। বোঝাই
যাচ্ছে , যীশু সম্পর্কে খৃষ্টানরা যে সব
কথা বলত , তার নিহিতার্থ না বুঝেই
মোহাম্মদ তার কোরানের মধ্যে যীশুর
কথা হুবহু ঢুকিয়ে দিয়েছিল।
বর্তমানে মুসলমানরা কোরানের সেই
উল্টা পাল্টা কথারই প্রতিধ্বনি করে যায়
তার নিহিতার্থ না বুঝেই।
তারা বুঝতে পারে না যে যীশুকে একবার
আল্লাহর বানী ও আল্লাহর
আত্মা হিসাবে স্বীকার করার পর
সে আর কোনভাবেই একজন রসূল
থাকতে পারে না, সে হয়ে যায়
স্বয়ং ঈশ্বর।
No comments:
Post a Comment