রোজ লোকাল ট্রেনে ভিক্ষা করেন এই ইঞ্জিনিয়ার-অধ্যাপক
ছাপোষা মধ্যবিত্ত চেহারা | সঙ্গে জিনিস বলতে ব্যাকপ্যাক আর হাতে একটা প্লাস্টিকের কৌটো | মুম্বইয়ের ভিড়ে ঠাসা লোকাল ট্রেনের নিত্যযাত্রীরা দিব্যি চেনেন তাঁকে | তিনিও নিত্যযাত্রী | তবে শুধু যাত্রা নয় | তিনি ট্রেনে ওঠেন ভিক্ষা চাইতে | পেশায় তিনি কিন্তু ভিক্ষাজীবী নন | তিনি মেরিন ইঞ্জিনিয়ার এবং একটি ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠানের অধ্যাপক | তবু রোজ ভিক্ষা চাইতে লোকাল ট্রেনে চাপেন | তিনি সন্দীপ দেশাই |
কিন্তু অধ্যাপক সন্দীপ দেশাই কেন নিয়ম করে ভিক্ষা করেন ?করেন স্কুলের ব্যয় বহন করতে | মহারাষ্ট্র এবং রাজস্থানের প্রত্যন্ত অংশে অনগ্রসর পরিবারের শিশুদের জন্য একাধিক ইংরেজি মাধ্যম স্কুল চালান তিনি | তার ব্যয় বহন করতেই অধ্যাপকের এই ভিক্ষাবৃত্তি |
সন্দীপের সংস্থার নাম ‘ শ্লোক পাবলিক ট্রাস্ট ‘ | সংস্থার নথি এবং সংবাদপত্রে প্রকাশিত তাঁর উপর ফিচার‚ সবই এই ভিক্ষুক অধ্যাপকের সঙ্গে থাকে | এখনও অবধি ৫০ লাখের বেশি টাকা সন্দীপ জোগাড় করেছেন লোকাল ট্রেন থেকে | যাত্রীরা মুক্তহস্তে দান করেন তাঁকে | ৫০০ জন পড়ুয়া উপকৃত হয়েছে তাঁর সংস্থা থেকে | একাধিকবার গ্রেফতার হতে হয়েছে সন্দীপকে | কিন্তু হাল ছাড়েননি তিনি | এখন অবশ্য স্টেশন মাস্টাররা এবং RPFকর্মীরাও চিনে গেছে তাঁকে | যাত্রীদের বদান্যতার পাশাপাশি রেলকর্মীদের সাহায্যের কথাও মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করেন তিনি |
সকালে অধ্যাপনার পর্ব সেরে বিকেলে লোকাল ট্রেনে ওঠেন ৫৫ বছর বয়সী সন্দীপ | বলে চলেন ‘গুড আফ্টারনুন এভরি ওয়ান | আমি অধ্যাপক সন্দীপ দেশাই | আমি অনগ্রসর শিশুদের পড়াতে চাই | আপনারাও আমার মিশনে সামিল হোন | মনে রাখবেন‚ শিক্ষাদানই শ্রেষ্ঠ দান | আপনি ক্ষুধার্ত মানুষকে খেতে দিলে তা হয়তো একদিনের জন্য দেবেন | কিন্তু শিক্ষার জন্য দান করলে তা থেকে যাবে জীবনভর …’
এগিয়ে চলে লোকাল ট্রেন | অধ্যাপক সন্দীপের কথা | সেইসঙ্গে ভরে ওঠে তাঁর ভিক্ষাপাত্র | সমাজের সব স্তরের শিশুদের মধ্যে আধুনিক শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে ভিক্ষাজীবী হতে দ্বিধাহীন এই ইঞ্জিনিয়ার-অধ্যাপক | https://m.facebook.com/hindu.yoddhablog/photos/a.536050066543316.1073741827.536026079879048/556679037813752/?_e_pi_=7%2CPAGE_ID10%2C7247607118
No comments:
Post a Comment