"একশো কোটি হিন্দুরে হে মুগ্ধ জননী,
রাখিলে ভদ্র করি, মানুষ করোনি”।
“তুমি অধম হইলেও আমি উত্তম না হইব কেন?”- সাহিত্য সম্রাট শ্রীযুক্ত বাবু বঙ্কিম চন্দ্র চট্টোপাধ্যায় কর্তৃক সৃষ্ট বিখ্যাত চরিত্র নবকুমারের মুখ নিঃসৃত এই শ্রী বানীটিই যে বঙ্গীয় হিন্দু সমাজকে “মরিশাসের ডোডো পাখীর ন্যায়” এক পার্থিব–বিরল আত্মঘাতী জাতীতে পরিনত করিতে সর্বাগ্রগণ্য ভূমিকা গ্রহন করিয়াছে, তাহাতে কাহারও কোন সন্দেহের অবকাশ থাকিবার কথা নহে। কারন হিসাবে ইহার সহিত অপর দুই প্রখ্যাত বঙ্গীয় আপ্তবাক্য – “যেমন কুকুর তেমন মুগুর” এবং “ইটটি মারিলে পাটকেলটিও খাইতে হয়”; গোছের বক্তব্যের স্ববিরোধ স্পষ্টতই দিবালোকের ন্যায় প্রতীয়মান।
ইহারই পাশাপাশি “ক্ষমাহি পরমং ধর্মঃ”- প্রকৃতির আরও গুটি কতক শান্তিনিকেতনী গো-বিতাড়নী শান্তি মন্ত্র আমাদের বঙ্গীয় হিন্দু সমাজের দুর্বলতাকেই প্রবল ভাবে সবল করিতে সক্ষম হইয়াছে।
সেই কবেই ঋষি প্রবর শ্রী অরবিন্দ তাঁহার “দিব্য জীবন” গ্রন্থখানিতে কি অপূর্ব ভঙ্গিতে দাস্য ও বীর ভাবের মধ্যে সুস্পস্ট প্রভেদ চিহ্নিতকরণ করিয়া গিয়াছেন। তাঁহার মতে “ক্ষমারও একখানি বিধিবদ্ধ সীমারেখা থাকা প্রয়োজন। ক্ষমার মন্ত্রে দীক্ষিত হইয়া উক্ত লক্ষনরেখা অতিক্রম করিয়া ক্ষমা প্রদর্শন যে কেবল অন্যায় কারীর সহিত আপোষ – তাহাই নহে, একান্ত কাপুরষতার লক্ষণও বটে”!
ইহার সূত্র ধরিয়াই পৃথিবীর সকল দুর্বল জাতিই অপেক্ষাকৃত সবলের অত্যাচার ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে বিচার করিতে নিতান্তই বাধ্য থাকেন ও পরিশেষে পুরুষাকারের একান্ত অভাব সত্বেও জাগতিক ক্ষমার মাহাত্যে প্রতিষ্ঠিত হইবার হাস্যকর প্রচেষ্টায় লিপ্ত হন।
ইহার সূত্র ধরিয়াই পূর্ববঙ্গ হইতে মান, সম্মান, নারীর ইজ্জত খোয়াইয়া এবং দূর্বার অপ্রতিরোদ্ধ বর্বর ইসলামী সন্ত্রাসে সর্বস্বান্ত হইয়া, সপ্ত পুরুষের ভিটে মাটি পরিত্যাগ করিয়া, চোখের জলে – নাকের জলে (অথবা ইহার পরিবর্তে যদি অন্য কিছুরও জল থাকিত)এক হইয়া, “মাটি বাপের নয়, মাটি দাপের” – এই পার্থিব সত্যকে হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করিয়া, রিফিউজির (উদ্বাস্তুর) সম্মানে বিভূষিত হইয়া এই বঙ্গে আগত কয়েক কোটি হিন্দুনন্দন বঙ্গবাসী আজও প্রকাশ্যে দন্ত বিকশিত করিয়া “হিন্দু-মুসলিম ভাই ভাই” – এই বিকট ও উদ্ভ্রান্ত ভণ্ডামোর প্রকাশ্য সওয়াল করতে এক মুহূর্তের জন্যেও দ্বিধা বোধ করেন না। ইহা নিঃসন্দেহেই সমকালীন সমগ্র পৃথিবীর এক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ গবেষণার বিষয় না হইতে পারাটাই অস্বাভাবিক।
ইহার সূত্র ধরিয়াই ইসরায়েলের ন্যায় একটি অতি ক্ষুদ্র দেশের পক্ষেও তাহার প্রতিবেশী শত্রুদের প্রতি এই রনহুঙ্কার দেওয়া সম্ভব, যে তাহারা একজন ইসরায়েলী সৈনিকের মৃত্যুর প্রতিশোধরূপে আটজন বিপক্ষীয় শত্রুর প্রাণনাশ করিবেক।
পক্ষান্তরে ইহার সূত্র ধরিয়াই পাকিস্থানী দুর্বৃত্তের দল ভারতের দুই জন সৈনিকের মস্তক ছেদন করিয়া লইয়া গেলেও ভারতবর্ষীয় কোন এক ভূতপূর্ব প্রধানমন্ত্রীরূপী উদ্বাস্তু সন্তান(পাক কতৃক দেহাতী ঔরত সম্মানে সম্মানিত),তাহারসলজ্জ প্রতিবাদ স্বরূপ পাকিস্থানের সহিত ক্রিকেট নামক একটি জনমোহিনী বিজাতীয় ক্রীড়া হইতে বিরত থাকার অঙ্গিকার করিয়া বসেন(কার্যক্ষেত্রে তাহাও সংঘটিত করিতে সফলকাম হন নাই)।
সুতরাং .. আইসেন ....অন্তত ভদ্র ভাবে বাঁচিয়া থাকিবার নিমিত্ত না হয় একটু অভদ্র হইলামই বা ... ক্ষতি কি? Raja Debnath
No comments:
Post a Comment