দেড় মাসে ১৮৬+ থেকে
১৩৫-এ নেমেছে তৃণমূল,
বলছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা
রিপোর্ট
দেড় মাসের মধ্যে উলটে গেল ছবি।
বিজেপি ৫-এর বেশি আসন পেলে
ত্রিশঙ্কু বিধানসভার সম্ভাবনা।
কলকাতা, ১ মে: সময়ের ব্যবধান দেড়
মাসের কিছু বেশি। তার মধ্যেই
ওলটপালট হয়ে গেল সব কিছু। মার্চের
শুরুতেও নিশ্চিত জয়ের মুখে দাঁড়িয়ে
থাকা তৃণমূলে এখন পরাজয়ের আশঙ্কা।
গত মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের রিপোর্ট
উলটে গেল মাঝ এপ্রিল পেরোতে না-
পেরোতে। কী করে হল এত কিছু?
তৃণমূল জিতছে। শুধু জিতছে না, পেতে
পারে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতাও। গত ৯
মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে পাঠানো
গোপন রিপোর্টে তেমনটাই
জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা
বিভাগ। তাতে বলা হয়েছিল, আসন্ন
নির্বাচনে তৃণমূল পেতে পারে ১৮৬টির
বেশি আসন। বামেরা পাবে ৬০-৭০টি,
কংগ্রেস ২০-২৫টি। আর বিজেপি
সর্বোচ্চ ৫টি। কিন্তু ভোটের বেলা
গড়তে না-গড়তে সেই রিপোর্টে বদলে
গেল আমূল। কী বলছে সাম্প্রতিক
গোয়েন্দা রিপোর্ট? পড়ুন: গঙ্গা
পেরিয়ে মমতাকে আর যেতে হবে না
নবান্নে, বিধানসভাতেও পাঠাবে
না ভবানীপুর, বললেন সেলিম
সাম্প্রতিক আইবি রিপোর্ট বলছে
নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা তো দূরঅস্ত,
সরকার গড়া হবে না মমতা
বন্দ্যোপাধ্যায়ের। রিপোর্ট অনুযায়ী
চলতি নির্বাচনে তৃণমূল সর্বোচ্চ পেতে
পারে ১৩৫টি আসন। এরাজ্যে
সংখ্যাগরিষ্ঠতারজন্য প্রয়োজন ১৪৮টি
আসন। তার থেকে ১৩টি আসন কম পাবে
তৃণমূল। বামেরা কত আসন পাবে তা
নিয়ে নির্দিষ্ট কিছু না বললেও বাকি
১৫৯টি আসনের মধ্যে বিজেপি যদি
৫টির বেশি পেয়ে যায় সেক্ষেত্রে
তৈরি হতে পারে ত্রিশঙ্কু
বিধানসভা। কারণ পাহাড়ের ৩টি
আসনে দাঁত ফোটাতে পারবে না বাম
বা তৃণমূল। যদিও কেন্দ্রীয়
গোয়েন্দাদের এই রিপোর্ট মানতে
রাজি নন তৃণমূলের শীর্ষনেতারা।
তাঁদের দাবি নিরঙ্কুশ
সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসবে
তৃণমূল। পড়ুন: ভাঙড়ে অন্তর্ঘাত হতে
পারে, কার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেন
রেজ্জাক ?
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের
মতে এবার ভোটের ফলে
হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা কম।
যে ভাবে ভোটের মেরুকরণ হয়েছে
তাতে যে দলই জিতুক জিতবে
একচেটিয়া ভাবে।
কিন্তু কী ভাবে দেড় মাসের
ব্যবধানে বদলে গেল ছবিটা?
বিশেষজ্ঞদের মতে, মার্চের শুরুতে যখন
ভোটঘোষণা হয়েছিল তখনও তৃণমূলের জয়
ছিল সময়ের অপেক্ষা। ৪ মার্চ কমিশন
নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রকাশের কয়েক
ঘণ্টার মধ্যেই প্রার্থীতালিকা
ঘোষণা করে সেই আত্মবিশ্বাস
জাহিরও করে দিয়েছিলেন তৃণমূল
নেত্রী। কিন্তু তার পর থেকে যেন
কিছুই যা্চ্ছে না তৃণমূলের পক্ষে।
পড়ুন: চিন্তায় দল ? পঞ্চম দফা যে যে
কারণে ভাবাচ্ছে তৃণমূলকে
তালিকা ঘোষণা হতেই একাধিক
জায়গায় প্রার্থী বদলের দাবিতে
তৃণমূলের অভ্যন্তরে শুরু হয় বিক্ষোভ। সেই
বিক্ষোভ আছড়ে পড়ে তৃণমূল ভবন ও
কালীঘাটে নেত্রীর বাড়িতেও।
কোনওক্রমে সেই বিক্ষোভ সামাল
দিয়ে যখন দলকে ফের এককাট্টা করার
গিয়েছে তখনই প্রকাশ্যে এল
নারদকাণ্ড। যার তদন্ত নিয়ে মতবিরোধ
দেখা দিল তৃণমূলের শীর্ষস্তরে।
ততদিনে জোরদার হয়েছে বাম
কংগ্রেস জোটও। নীচুতলার কর্মীদের
মতো কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ময়দানে
নেমেছেন এরাজ্যের শীর্ষনেতারাও।
নারদ নিয়ে একের পর এক হামলা
সামলাতে প্রথমে ‘ফুটেজ ভুয়ো’ বলে
দাবি করা হয় তৃণমূলের তরফে। তার পর
একের পর এক যুক্তি, কখনো ‘অনুদান’,
কখনো ‘কালো টাকা’, এমনকী ঘুষ
দেওয়ার দায় সাংবাদিকের ঘাড়েই
ঠেলার চেষ্টা করেন তৃণমূল নেত্রী।
কিছুতেই কাজ হচ্ছে না বুঝে ঘুরিয়ে ঘুষ
নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলে বাম-
কংগ্রেস বিজেপিও এভাবে টাকা
নেয়। ক্ষমাও চান নিজের কেন্দ্রের
ভোটের আগে। বলেন, ‘চড় মারুন কিন্তু
চোর বলবেন না’। যদিও ততদিনে দেরি
হয়ে গেছে অনেকটাই ১৮৬ থেকে তৃণমূল
নেমে এসেছে ১৩৫-এ। গোয়েন্দা
রিপোর্ট অনুযায়ী।
No comments:
Post a Comment