Thursday, 12 May 2016

কাটমোল্লাদের দ্বারা সৃষ্ট “দেবী সরস্বতীকে” কে নিয়ে একটি মিথ্যাচারের পর্দাফাঁস

কাটমোল্লাদের দ্বারা সৃষ্ট “দেবী সরস্বতীকে” কে নিয়ে একটি মিথ্যাচারের পর্দাফাঁস ★ কাটমোল্লাদের দ্বারা সৃষ্ট হিন্দুধর্মে নতুন এক বিকৃতি ★ ||সরস্বতীর মন্ত্র ও নারীর অপমান|| ওঁ জয় জয় দেবী চরাচর সারে, কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে। বীনারঞ্জিত পুস্তক হস্তে, ভগবতী ভারতী দেবী নমহস্তুতে।। 'কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে' 'কুচ' অর্থ 'স্তন (breast)', যুগ- জুগল বা জোড়া, শোভিত- শোভা বর্ধণ বা সৌন্দর্য্য প্রকাশ। এখানে দেবী সরস্বতীর অঞ্জলীতে দেবী সরস্বতীর বর্ণনা এই ভাবে করা হয়েছে –সরস্বতী এমন দেবী যার স্তন দুটো শোভা বর্ধন করছে মুক্তার হারে। যে দেবী বীনা দ্বারা রঞ্জিত হয়েছে, হাতে পুস্তক আছে। সেই ভগবতী ভারতী দেবী কে নমস্কার করি। ★ কাটমোল্লাদের আবিস্কারের বিশ্লেষণ ★ এটা নতুন কোনো ব্যাপার না অল্পবিদ্যাধারী কাটমোল্লারা এইসব বিকৃতি ঘটিয়ে আসছে সেই আকবরের সময়কাল থেকে,যাতে কিছু হিন্দুদের ব্রেণওয়াশ করে মুছলমান বানানো যায়। এই স্টাইলটা এখন ডাঃ জাকির স্টাইল নামে পরিচিত। এবার দেখি কাটমোল্লাদের আবিস্কারের বিশ্লেষণ- সম্ভবত কাটমোল্লারা এখানে কোনো বাংলা অভিধান থেকে "কুচযুগ" শব্দের অর্থ "স্তনযুগল" বের করেছে, কিন্তু সংস্কৃত ব্যাকরণের জ্ঞান না থাকাই ওরা এই বিকৃতিটাও ঠিকভাবে করতে পারেনি, খুব সহজে তাদের সৃষ্টিকরা বিকৃতি চোখে ধরা পড়ে। উক্ত যে মন্ত্রটার ওরা বিকৃতি করছে তা একমাত্র বঙ্গভূমিতেই কেবল প্রচলিত আছে। এখানে "কুচযুগশোভিত" তে ৩টা শব্দ যুক্তাক্ষরের দ্বারা যুক্ত আছে, যথা - কুর্চ+যুগঃ+শোভিত। এখানে "কুর্চ" শব্দের "রেফ" টি যুক্তাক্ষরের সময় লোপ পেয়ে হয়েছে "কুচ", এখানে মূল শব্দটা "কুর্চ", এর বাংলাতে উচ্চারণ হয় "কুর্চ" হিসাবে ও হিন্দিতে উচ্চারণ হয় "কূর্চ/kUrca" হিসাবে। উক্ত মন্ত্রের শুদ্ধ অনুবাদ নিম্নরূপ- ★মন্ত্র★ ওঁ জয় জয় দেবী চরাচর সারে, কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে। বীনারঞ্জিত পুস্তক হস্তে, ভগবতী ভারতী দেবী নমহস্তুতে।। ★শব্দার্থ★ (ওঁ)পরমাত্মা/ঈশ্বর (জয় জয়)জয় জয়কার (দেবী)দেবী (চরাচর সারে)সর্ব্ব্যাপি, (কুর্চ)বৃদ্ধা ও মধ্য অঙ্গুলীর অগ্রাংশ (যুগ)দীপ্তিময় (শোভিত)শোভাবর্ধক (মুক্তাহারে)মুক্ত মালা দ্বারা। (বীনারঞ্জিত)বীনা দ্বারা রঞ্জিত (পুস্তক হস্তে)পুস্তক হাতে,(ভগবতী)নারী রূপী পরমাত্মা/ঈশ্বর (ভারতী)বাণী (দেবী)দেবী (নমহস্তুতে)করজোড়ে প্রণাম।। ★ভাবার্থ★ সর্ব্ব্যাপি পরমাত্মারূপী দেবীর জয়,যাহার অঙ্গুলীর অগ্রাংশ দীপ্তিময় মুক্তমালা দ্বারা শোভিত। যিনি বীনা দ্বারা রঞ্জিত হস্তে পুস্তক(বেদ) ধারণকারী,সেই পরমাত্মারূপী বাণীদেবীকে করজোড়ে প্রণাম। ★বিশ্লেষণ★ ইতর কাটমোল্লাদের স্বভাব দেখুন এই আচ্ছা খাসা মন্ত্রে "স্তন" ঢ়ুকিয়ে দিলো,কাটমোল্লারা ওদেরই অনুবাদে ওরাই রিফিউট হয়ে যায় যখন অনুবাদ করে "কুচযুগ" মানে "স্তনদ্বয়" অর্থ্যাৎ কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে = স্তনদ্বয় শোভিত মুক্তমালা দ্বারা অর্থ্যাৎ স্তনে মুক্তর মালা পড়তে হবে!! দ্বিতীয় বারেও ওরা রিফিউট হয়ে যায় কারণ "কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে" এরপরেই আছে "বীনারঞ্জিত পুস্তক হস্তে" অর্থ্যাৎ যেখানে মন্ত্র বলে দেবীর ৪ হাতে ৩টি জিনিস ধারণ করে আছে- দুই হাতে বীনা, এক হাতে পুস্তক এবং এক হাতে মুক্তর জপমালা- সেখানে কাটমোল্লারা আগেই স্তনে মুক্তর মালা ভেবে নিলো তারপর দেখছে হাতে পুস্তক আর বীনা আছে! তাই যদি হয় তবে দেবীর আরেক হাতে মুক্তর জপ মালা কোথাই গেলো? মূর্তিতে দেবী ৪হাতে ৩টা জিনিস ধারণ করে আছে,আমি ২টোর বর্ণনার দিবো আরেক টাকে বাদ দিবো!! দেবীভাগবত পুরাণে , নবম স্কন্ধ, অধ্যায় ১, ২ ও ৪ তে উল্লেখ আছে মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে শ্রীকৃষ্ণ নিজে দেবীর পূজা করে দেবী পূজার প্রবর্তন করেন এবং দান স্বরূপ তিনি দেবীকে সর্ব্বত্তম একটি মুক্তমালা দান করেন, যা দেবী জপমালা হিসাবে গ্রহণ করেন, যার জন্য দেবীমূর্তিতে দেবীর এক হাতে মুক্তর জপমালা বর্তমান। এরপর যদি আমরা বেদ থেকে বিশ্লেষণ করি তবে বীনা, পুস্তক ও জপমালা এই তিনটির উল্লেখ পাবো প্রতিক হিসাবে! ঋগ্বেদের ১.৩.১০-১২ ও ৬.৬১.১-১৪ তে দেবী সরস্বতীকে মূলত সর্ব্ব্যাপি সূর্যাগ্নি ও নারীরূপী ঈশ্বরের একটি স্বরূপ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। ঋ ১.৩.১০-১২ তে তিনি বাণী, মূর্তিতে যার প্রতিক এই বীনা, ঋ ১.৩.১০ ঋ ৬.৬১.১-৩ তিনি জ্ঞান, মূর্তিতে যার প্রতিক এই পুস্তক(বেদ), ঋ ৬.৬১.৪-৫ তিনি দীপ্তময় জ্যোর্তির মাতা এবং অন্ধজ্ঞানের নাশক, মূর্তিতে যার প্রতিক এই মুক্তা জপমালা। Writer & Editor - Samir Kumar Mondal

No comments:

Post a Comment