স্তিমিত বিজেপি হাওয়াতেও নিচুতলার কর্মীদের উাসের আঁচ পেলেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা৷ কলকাতা থেকে ৭৪ কিলোমিটার দূরে শমীক ভট্টাচার্যের বিধানসভা কেন্দ্র , বসিরহাট দক্ষিণে বিজেপির কর্মিসভায় শনিবার দলের নিচুতলার কর্মীদের মধ্যে দেখা গেল নজিরবিহীন উাস৷ গত এক মাসে দফায় দফায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে দলীয় জনসভা করে গিয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ -সহ বিজেপির তাবড় নেতারা৷ তবে এ দিন শমীক ভট্টাচার্যের বিধানসভা কেন্দ্রের কর্মী সম্মেলনে যে উচ্ছাস নেতাদের চোখে পড়েছে , তা দেখে ফের নতুন করে চাঙ্গা হয়ে উঠেছেন তাঁরা৷ বসিহরাটের রবীন্দ্রভবনে ভিড়ে ঠাসা কর্মী সম্মেলনে তাই উাস চেপে রাখেননি দলের কেন্দ্রীয় নেতা সিদ্ধার্থনাথ সিং৷ তাঁর মতে , বিধানসভা ভোটে শমীক ৫০ হাজারেরও বেশি মার্জিনে জিততে চলেছেন৷ দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা বিজেপির নিচুতলার কর্মীদের শমীকের উপর ‘আস্থা ’ দেখে বলেই ফেললেন , ‘আমি এখানে শমীক তাঁর বিধানসভা কেন্দ্রে কী কী কাজ করেছেন , তা বলতে আসিনি৷ কারণ , শমীক এমনিও জিতবেন ওমনিও জিতবেন৷ তা নিয়ে আরও কোনও সন্দেহ নেই৷ ’ বিধানসভা ভোটের দিনক্ষণ এখনও ঘোষণা হয়নি৷ কোনও রাজনৈতিক দলই এখনও প্রার্থী তালিকা চড়ান্ত করেনি৷ তবে বসিরহাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে ইতিমধ্যেই নির্বাচনী দামামা বেজে গিয়েছে৷ ওই বিধানসভা কেন্দ্র দলীয় পতাকায় মুড়ে দিয়েছে তৃণমূল৷ ফুটবলার দীপেন্দু বিশ্বাসই যে শমীক ভট্টাচার্যের মোকাবিলা করতে বসিরহাট দক্ষিণ থেকে ফের ভোটে দাঁড়াচ্ছেন , সে বার্তাও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের কাছে৷ নিয়ম করে নির্বাচনী সভা -মিছিল শুরু করে দিয়েছে শাসকদল৷ সেখানে শমীককে ‘সাময়িকী ভট্টাচার্য’ বলে আক্রমণও করা হচ্ছে৷ এ দিন কর্মী সম্মেলনে সেই আক্রমণের জবাবে শমীক বলেন , ‘আমাকে বসিরহাটের মানুষ প্রতিদিন দেখতে পান না ঠিকই৷ কিন্ত্ত পাশাপাশি , এটাও ঠিক আমি বিধায়ক হওয়ার পর থেকে গোরু পাচারের লরিগুলিও আর দেখা যায় না৷ সীমান্ত দিয়ে চোরাচালান অনেক কমে গিয়েছে৷ অনেক চোরাচালানকারী আমার সঙ্গে লুকিয়ে দেখা করতে এসেছিল৷ ’ এই প্রসঙ্গে তাঁর সংযোজন , ‘সবাইকে মুড়ি -মুড়কির মতো কেনা যায় না৷ শমীক ভট্টাচার্য নট ফর সেল৷ ’ সিদ্ধার্থনাথ সিং বলেন , ‘উপ -নির্বাচনে শাসকদলের প্রার্থীরাই জয় লাভ করেন৷ বঙ্গ রাজনীতিতে এটাই দস্ত্তর৷ কিন্ত্ত শমীক উপ -নির্বাচনে জিতে সব হিসেব পাল্টে দিয়েছিলেন৷ দলীয় কর্মীদের মধ্যে যে উাস দেখছি , তাতে শমীককে হারানো কঠিনই নয় , কার্যত অসম্ভব৷ ’ স্থানীয় বিজেপি নেতাদের অভিযোগ , বসিরহাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের সংখ্যালঘু ভোটারদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে তৃণমূল৷ এ দিনের কর্মী সম্মেলনে শমীক তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়ে বলেন , ‘আজকের পৃথিবীতে গোরু -শুয়োর নিয়ে রাজনীতি চলে না৷ কালীপুজো আর নামাজ নিয়েও রাজনীতি করার মানে হয় না৷ বিভাজনের রাজনীতি বন্ধ হওয়া উচিত৷ রাজনীতির একটিই ভাষা৷ সেটা হল উন্নয়ন৷ ’ তবে দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য তৃণমূলের কয়েকজন মন্ত্রীর প্রশংসা করতেও কোনও কার্পণ্য করেননি৷ তিনি বলেন , ‘আমি নিজের কেন্দ্রে সারাদিন পড়ে না থাকলেও কেন্দ্রের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন মন্ত্রীর দরবারে ছুটে বেড়াই৷ পার্থ চট্টোপাধ্যায় , ফিরহাদ হাকিম , সুব্রত মুখোপাধ্যায়দের মতো মন্ত্রীদের সহযোগিতা পেয়েছি এলাকার উন্নয়নের জন্য৷ ’বসিরহাট দক্ষিণ৷
No comments:
Post a Comment