প্রশ্ন : বেদে উল্লেখ নেই তবুও কেন প্রতিমা পূজা করি আমরা ?
উত্তর::- মূলত জাকির নায়েকের বয়ান শুনে অনেক জাকিরপ্রেমী আমাদের প্রশ্ন করে বেদে উল্লেখ নাই তারপরও কেন প্রতিমাপূজো ??আমাদের সনাতন ধর্মে প্রতিমাপূজা আরাধনার সূচনাপর্বের বিষয়। প্রথমেই বলে রাখি;আমাদের পূজা “মূর্তি পূজা” নয়, বরং এর উচ্চারণ হবে “প্রতিমা পূজা”। আমরা কখনোই মূর্তিকে পূজা করি না;মূর্তির মধ্য প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে তাকে ঈশ্বর জ্ঞানে পূজা করি। ..........
প্রতিমার মাধ্যমে ঈশ্বরের পূজাকরার অর্থ হল ঈশ্বরের প্রতি নিজের বিশ্বাসকে দৃঢ় করা। বেদ যখন রচিত হয় তখন মানুষের মধ্য তেমন কোন কর্মচঞ্চলতা ছিল না। যজ্ঞানুষ্ঠানই ছিল ঋষিদের প্রধান কর্ম। যজ্ঞের মাধ্যমে হোমানল জ্বালিয়ে তখন দেবতাদের আহ্বানকরা হত, অগ্নির মাধ্যমেই দেবতাদের উদ্দেশ্য দেওয়া হতো পুষ্পাঞ্জলি । তাই, আমরা বেদেপ্রতিমা পূজার উল্লেখ দেখতে পাইনা।
এই কলিযুগে সনাতন ধর্মেরনিরাকার উচ্চ স্তরের উপাসনা প্রায় অসম্ভব। কারণ, কলি যুগে আমাদের মনএতই চঞ্চল যে একে নিয়ন্ত্রণ করাদুঃসাধ্য ব্যাপার। মনকে নিয়ন্ত্রণ করার একটি সহজ উপায় হচ্ছে, চোখের মধ্য কোন বস্তুর ছবি ফেলা। পরবর্তীতে, ওই ছবিটি যদি নাওথাকে তবে চোখের সামনে তার প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠবে। তাই, সাধারন মনোনিবেশ তথা চিত্তকে বিষয়বাসনা থেকে সরিয়ে একাগ্রচিত্তেভগবানকে স্মরণ করার জন্য প্রতিমাপূজাএকটিবিজ্ঞান সম্মত পদ্ধতি।. . . . . . . . . . . . . . . . . . .
একটি শিশুকে প্রথম পাঠদানের সময়অনেক রঙিন ছবি সম্বলিত বই দেওয়া হয় যাতে ঐ বইটির প্রতি শিশুর আকর্ষণবাড়ে। এখানে ছবি মুখ্য নয়, মুখ্য হচ্ছেবর্ণমালা। ঠিক তেমনি আমাদেরচঞ্চলমন প্রতিমার মাধ্যমে ঈশ্বরের প্রতিআকৃষ্ট হয়। এখানে,ঈশ্বরের করুণা লাভই হচ্ছে মুখ্য বিষয়।
পরিশেষে একটি কথাই বলতে চাইযে,আমাদেরআদিধর্ম গ্রন্থ বেদে নিরাকারউপাসনারকথা বলা হয়েছে। কিন্তু, কলিযুগেরজীবের উদ্দেশ্যগীতার দ্বাদশ অধ্যায়ে স্বয়ং ভগবানশ্রীকৃষ্ণঅর্জুনকে বলেছেন যে, অব্যক্তউপাসনা দেহাভিমানীজীবেরপক্ষেসম্ভবপর নয়।তাই, দেহাভিমানী জীবেরজন্য সগুণসাকারউপাসনাই শ্রেষ্ঠ ও সহজতর। আর এইসকলকারনেই, বর্তমান কলিযুগে আমরাহিন্দুরা বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করেপ্রতিমাপূজারমাধ্যমে ঈশ্বরেরআরাধনা করে থাকি
No comments:
Post a Comment