Thursday, 17 December 2015

☆☆বায়ু পথের যুদ্ধ, ১৬৬০☆☆

☆☆বায়ু পথের যুদ্ধ, ১৬৬০☆☆ . সূচনাঃ মারাঠা সাম্রাজ্য ও আদিল শাহী বংশের মধ্যে ১৬৬০ সালের ১৩ জুলাই 'পবন খিন্দের' যুদ্ধ সংঘটিত হয়। পবন অর্থ বায়ু ও খিন্দ অর্থ সংকীর্ণ পথ (pass)। ভারতের মহারাষ্ট্রের কোলাপুর শহরের কাছে বিশালগড় দূর্গের নিকটে 'পবন খিন্দ' অবস্থিত। আদিল শাহী ছিল শিয়া মুসলিম। রাজধানী কর্ণাটক প্রদেশের বিজাপুর। ১৬৮৬ সালে বাদশা আওরঙ্গজেবের বিজাপুর জয়ের মাধ্যমে আদিল শাহী বংশের সমাপ্তি ঘটে। . পটভূমিঃ রাজা শিবাজী প্রতাপগড় ও কোলাপুরের যুদ্ধে জয়ের পর বিজাপুর অভিমুখে অগ্রসর হলেন। বিজাপুরি সেনার তীব্র প্রতিরোধের কারণে মারাঠারা পিছু হটতে বাধ্য হয় এবং কোলাপুরের পানহালা দূর্গে আশ্রয় নেয়। বিজাপুরের আব্বাসীয় সেনাপতি সিদ্ধি জোহর মারাঠাদের অবস্থান শনাক্ত করেন। সিদ্ধি জোহর টানা ৫ মাস পানহালা দূর্গ অবরোধ করেন। আরেক মারাঠা সেনাপতি নেতাজী পালকর দূর্গের বাইরে থেকে বারবার আক্রমণ করেও অবরোধ ভাঙতে ব্যর্থ হন। . পরিকল্পনাঃ পানহালা থেকে বিশালগড়ের দূরত্ব ৬০ কিমি। ৬০০ মারাঠা সৈন্যের বিপরীতে বিজাপুরি সৈন্য ছিল ১০০০০। তাই এই যুদ্ধে জয় লাভ মারাঠাদের জন্য অসম্ভব। শেষ পর্যন্ত এক দুঃসাহসী ও অধিক ঝুঁকিপূর্ণ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। শিবা কাশিদ নামে এক সৈন্যের সাথে রাজা শিবাজীর চেহারার যথেষ্ট মিল ছিল। শিবাকে রাজার পোষাকে সাজানো হল। ১৩ জুলাই রাতে শিবাজি অবরোধ ভেঙে বিশালগড়ের উদ্দেশ্যে পানহালা ত্যাগ করেন। বিজাপুরি সৈন্য মারাঠাদের প্রবল বেগে ধাওয়া করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী শিবা কাশিদ স্বেচ্ছায় ধরা দেন। তাকে বিজাপুরি ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। একবার প্রতারণা ধরা পড়লে নিশ্চিত মৃত্যু, তা জানা সত্বেও শিবা কাশিদের আত্নত্যাগ মারাঠাদের পালানোর কিছুটা সময় দেয়। বিজাপুরি সৈন্য নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে আবার ধাওয়া শুরু করে। ততক্ষণে মারাঠারা পবন খিন্দ পৌঁছে যায়। শিবাজী ৩০০ সৈন্য নিয়ে বিশালগড় অভিমুখে যাত্রা করেন। অবশিষ্ট মারাঠা সৈন্য চূড়ান্ত যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়। . শক্তি-সামর্থ্যঃএই যুদ্ধে মারাঠা নেতৃত্বে ছিলেন 'বাজি প্রভু দেশপান্ডে।' মারাঠা সৈন্য সংখ্যা ২৫০-৩০০ জন। বিজাপুরি সৈন্য সংখ্যা ৪০০০। নেতৃত্বে ছিলেন সিদ্ধি মাসুদ। . পবন খিন্দের যুদ্ধঃ পবন খিন্দ দুই পর্বতের মধ্যবর্তী এক সংকীর্ণ পথ। এ পথে পাশাপাশি কয়েক জন সৈন্য চলতে পারে। দেশপান্ডের নেতৃত্বাধীন মারাঠা পবন খিন্দ অবরোধ করে। এখানে প্রায় ৩০০ মারাঠার সাথে ৪০০০ বিজাপুরি সৈন্যের যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধ ছিল তলোয়ারের যুদ্ধ। মারাঠারা তলোয়ার চালনায় দক্ষ ছিল। রক্তাক্ত হওয়া সত্বেও তারা দুই হাতে তলোয়ার নিয়ে লড়তে থাকে। শিবাজী বিশালগড় দূর্গে পৌঁছে তিনটি কামানের গোলার মাধ্যমে সংকেত দেওয়া পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ করেন মারাত্নক আহত দেশপান্ডে। 'বাজি প্রভু দেশপান্ডে' সহ প্রায় প্রত্যেক মারাঠা এই যুদ্ধে নিহত হয়। বিজাপুরি সৈন্য নিহত হয় ৩০০০। . বিশালগড়ঃ বিশালগড় দূর্গ আগে থেকেই বিজাপুরি সৈন্য অবরোধ করে রাখে। দূর্গের দায়িত্বে ছিলেন মারাঠা সেনাপতি রঙগো নারায়ণ। তার প্রচন্ড আক্রমণে বিজাপুরি সৈন্য পানহালা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। . উপসংহারঃ মারাঠা ও আদিল শাহীর মধ্যে সংঘটিত শেষ গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ 'পবন খিন্দ'। এ যুদ্ধে জয়ের মাধ্যমে মারাঠারা স্বাধীন হিন্দু রাজ্য গঠনে সক্ষম হয়। ১৬৭৩ সালে শিবাজী পানহালা দূর্গ পুনর্দখল করেন। . wiki/Battle_of_Pavan_Khind wiki/Bajiprabhu ছবিঃ পানহালা দূর্গ Photo link https://m.facebook.com/hindu.yoddhablog/photos/a.536050066543316.1073741827.536026079879048/564028990412090/?_e_pi_=7%2CPAGE_ID10%2C5099094006

No comments:

Post a Comment