Thursday, 24 December 2015

পুজার পদ্ধতি

আপনি দুটি ইসু তে বলেছেন- ১ ইস্বার অ দুই পুজার পদ্ধতি- আপনায় বলি- ইস্বার ১ আমরা মানি- আপনাই প্রথমে বুঝতে হবে ধর্ম তে কি বলা হয়েছে- আমাদের ধর্ম আসলে কি? হিন্দু? সেটা ত নাম মাত্র- আমাদের এই বিশ্বাস বা ধর্মের নাম আর্জ-সনাতন- আপনি অস্বিকার করলেউ সত্যি টা পালটাই না- যে আপনিও একদিন এই ধর্মের ছিলান- আপনার পদবি থেকে পরিস্কার- আর শুধু আপনি কেন? ভারতের সবচেয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলিম মহাম্মাদ আলি জিন্না-তাহার পিতা জিন্নাহভাই পুঞ্জাউ এক হিন্দু গুকুলদাস মেঘজির সন্তান- আদি বাড়ি গুজ্রাথের গন্দালে- গুগল করতে পারেন এবার আপনার প্রথম বিশয়ে আসি- আর্জ ধর্ম- বৈদিক ধর্ম- এতে- 'আধ্যাত্মিকতা' বেশী- স্বামি দয়ানন্দ- সংকারাচার্জ এই চিন্তার নতুন ভাব দেন- এবং স্বামি বিবেকানন্দ একদিন আলমরা উত্তারখান্ডে এক আধ্যাতিক আশ্রম বানান- এই নিয়মে 'মূর্তি' বাঁ বিগ্রহ পুজার রীতি নাই- এই চিন্তা অনুযায়ী- ইস্বার OMNIPRESENT OMNIPOTENT ও OMNISCIENT অর্থাৎ সর্ব স্থানে আছেন- তার কোন রুপ নাই- তার কোন আকার নাই- শেষ নেই শুরু নেই- অনেকটা ইসলামে 'আল্লাহ'কে যেরকম বোঝানো হয়- এই চিন্তা প্রাচীন আর্জ শাস্ত্র থেকে ব্রাহ্ম সমাজেও রাজা রামমহান রায় আনেন- আরেক দিক হোল- সনাতন- এই রীতি কে প্রবর্তন করেছিলেন বলা যায় না- কিন্তু এর শুরু হয়- শ্রী কৃষ্ণের পৃথিবির ভুমি ত্যাগের পর- বলা হয়, ভগবান কৃষ্ণের ভক্তরা- এই রীতি শুরু করে গোপালের এক প্রতিচ্ছবি সামনে রাখার জন্য- বিগ্যান মতে- মানুষের দৃষ্টি সক্তি অন্যান্য সেন্স গুলির থেকে বেশী- তাই এই প্রভাভের ফলে মানুষের সাধারন মনে হয়- তিনি বুঝি আমার সামনে আছেন- এতে কারুর কোন ক্ষতি তহ হই না- উল্টে যিনি এই বিশ্বাস করছেন তার মনে এক শক্তির সঞ্চার হয়- এবার ব্যাপার হোল- এই দুইয়ের মধ্যেও অনেক সময় মন মালিন্যা দেখা দিয়েছে- আর এই সমস্যার সমাধান ঘটিয়েছেন স্বামি ভিভেকানন্দ- আপনাই আগেই বলেছি তিনি 'মূর্তি বিহীন আশ্রম' বানিয়েছিলেন- কোন মুর্তি ছারা সামনে- সারা ভারত ভ্রমন শেষে এই দেশের কথা ভেবে আদ্যাতিক গ্যান অর্জন করেছিলেন কন্ন্যাকুমারির মাঝ সমুদ্রের পাথরে বসে-( যা আজ বিবেকানন্দ মেমরিয়াল)। এই সময় স্বামী বিবেকানন্দ একবার রাজস্থান এর এক অঞ্চল এ গিয়ছিলেন।সেখানকার রাজা আসলেন স্বামীজির সাথে দেখা করতে।কথার এক পর্যায়ে রাজা স্বামীজিকে বললেন সনাতন অনুসারিদের মূর্তির প্রতি তার কোন ভক্তি নেই।কেন তিনি একটি মাটির অথবা পাথর অথবা কাঠ দিয়ে বানানো মূর্তির পুজা করবেন?সত্যি কি কোন মূর্তি মানুষের কথা শুনতে পারে??আরও ভারতীয় “পি কে” সিনেমাতে আমিরখান যেসব প্রশ্ন করেছিলেন দোকানিকে সেরম প্রশ্ন করলেন।তো রাজার প্রশ্ন শুনে স্বামীজি হাসলেন এবং রাজার সহকারীকে বললেন রাজার একটি ছবি আনতে।যখন সহকারি ছবি আনলেন তখন স্বামীজি বললেন রাজার ছবি তে থু থু ফেলতে।স্বাভাবিকভাবেই রাজার সহকারীটি স্বামীজির কথা শুনে স্তম্ভিত হয়ে রইলেন।স্বামীজি আবার বললেন রাজার ছবি তে থু থু ফেলতে।সহকারি এবার ও স্তম্ভিত হয়ে রইলেন।শেষ পর্যন্ত সহকারী চিৎকার করে বললেন “আমি কিভাবে থু থু ফেলব রাজার ছবিতে তিনি তো আমাদের রাজা।“ তখন স্বামীজি বললেন “তোমার রাজা তোমার সামনে বসে আছেন। এই ছবি তো একটা কাগজ,না এই কাগজ শুনতে পারে,না বুজতে পারে,না এ কাগজ বলতে পারে তবুও তুমি এই একটা কাগজে থু থু ফেলতে পারছ না কারন এখানে তোমার রাজার একটা ছায়া আছে তাই ছবি টা তোমার কাছে রাজার সমতুল্য।তখন রাজা বুজতে পারলেন স্বামীজি আসলে কি বোঝাতে চেয়েছেন।স্বামীজি বোঝালেন - 'ভক্তি' বড় কথা- আপনার পুজার রীতি নয়- আপনার মনে ভক্তি যদি ঠিক থাকে- আপনার পুজার ফলে যদি কেউ দুঃখ কষ্ট না পাই- সে এক মানুষ হোক বা এক সামান্য প্রাণী (বলে রাখি বলিদান প্রথা কিন্তু তিনি চাননি- তাই তাহার রামকৃষ্ণ মিশনে বলিদানের রীতি নাই- কারণ প্রকৃত প্রাণদাতাকে কখনই তাঁর সৃষ্টির প্রাণনাশ করে খুশি করা যাই না)- এবং গুরুত্বপুর্ন ভাবে আপনার মানবসেবায় যেন ত্রুটী না থাকে তাহলে আপনার ধর্ম সার্থক যেমন শিবার মাথায় মুল্যবান দুধ ধালতে তিনি বারন করেন নি- কিন্তু নিজের হাথে চণ্ডালকে পেট ভরে খাইয়ে বললেন- "জীবে প্রেম করে যেই জন; সেই জন সেবিচে ঈস্বার"- এবং তারপর তাকে বুকে নিয়ে ঘোষণা করলেন- দরিদ্র ভারতবাসী চণ্ডাল ভারতবাসী আমার ভাই"- এই আমাদের আদর্শ আমরা আর এস এস বা যে কোন প্রকৃত আর্জ সনাতন এই রীতি মেনে চলে- আমার দেশ ও আমার ধর্ম দুই আমার কাছে সমান। আমি তো জানি যে ওই সামান্য তুলসি গাছটি ব্রহ্মাণ্ড বানাই নি- জানি তো ওই সামান্য শিলটির কোন ক্ষমতা নেই- জানি যে ওই মৃত্তিকার নির্মিত বিগ্রহ এক বস্তু মাত্র- কিন্তু এই ছোট্ট জিনিসটিকে সম্মান কেন জানায়? কৃতোজ্ঞতা থেকে- যে এই উপহার আমার ঈস্বার আমায় দিয়েছেন- যে ভাবে আপনার প্রিয়জনের সামনে না থাকার অভাব তাঁর দেওউয়া কোন উপহার দেখে আপনি মনে করেন সেরকম- যেমন এক কালো পাথর আপনার কাছে এক আল্লাহর প্রেরিত এক নিশান সেইরকম। এই সুর্জ আমায় রশ্মি দেয় প্রাণ দেয়- ওই গঙ্গা হাজার বছর ধরে আমার তেষ্টা মেটাই- ওই হিমালয় আমার সুজলা সুফলা বাড়ী রক্ষা করে চলেছে চিরকাল- আমার বিধাতার এই আমার জন্য দান করা এক একটি প্রতিক এগুলি- আমার প্রাণ আমার ভালোবাসা আমি আপনার মধ্যে- আমার আশে পাসের মানুষের মধ্যে পায়- কারণ আপনিও আমার সৃষ্টিকর্তার এক প্রতিক-

1 comment:

  1. তাই স্বামীজি এক সুন্দর কাহিনি দ্বারা চিকাগ ধর্ম মহাসভায় সকলকে চকিত করেন - একটি ব্যাঙ একটি কুয়ার মধ্যে বাস করিত। সে বহুকাল সেইখানেই আছে। যদিও সেই কুয়াতেই তাহার জন্ম এবং সেইখানেই সে বড় হইয়া উঠিয়াছে, তথাপি ব্যাঙটি আকারে অতিশয় ক্ষুদ্র ছিল। অবশ্য তখন বর্তমান কালের ক্রমবিকাশবাদীরাকেহ ছিলেন না, তাই বলা যায় না, অন্ধকার কূপে চিরকাল বাস করায় ব্যাঙটি দৃষ্টিশক্তি হারাইয়াছিল কি না; আমরা কিন্তু গল্পের সুবিধার জন্য ধরিয়া লইব তাহার চোখ ছিল। আর সে প্রতিদিন এরূপ উৎসাহে কুয়ার জল কীট ও জীবাণু হইতে মুক্ত রাখিত যে, সেরূপ উৎসাহ আধুনিক কীটাণুতত্ত্ববিদ্গণেরও শ্লাঘার বিষয়। এইরূপে ক্রমে ক্রমে সে দেহে কিছু স্থূল ও মসৃণ হইয়া উঠিল। একদিন ঘটনাক্রমে সমুদ্রতীরের একটি ব্যাঙ আসিয়া সেই কূপে পতিত হইল।
    কূপমণ্ডূকে জিজ্ঞাসা করিল, ‘কোথা
    থেকে আসা হচ্ছে?’
    ‘সমুদ্র থেকে আসছি।’
    ‘সমুদ্র? সে কত বড়? তা কি আমার এই কুয়োর মতো বড়?’ এই বলিয়া কূপমণ্ডূক কূপের এক প্রান্ত হইতে আর এক প্রান্তে লাফ দিল।
    তাহাতে সাগরের ব্যাঙ বলিল, ‘ওহে ভাই, তুমি এই ক্ষুদ্র কূপের সঙ্গে সমুদ্রের তুলনা করবে কি ক’রে?’ ইহা শুনিয়া কূপমণ্ডূক আর একবার লাফ দিয়া জিজ্ঞাসা কলিল, ‘তোমার সমুদ্র কি এত বড়?’
    ‘সমুদ্রের সঙ্গে কুয়োর তুলনা ক'রে তুমি কি মূর্খের মতো প্রলাপ ব'কছ?’
    ইহাতে কূপমণ্ডূক বলিল, ‘আমার কুয়োর মতো বড় কিছুই হ’তে পারে না, পৃথিবীতে এর চেয়ে বড় আর কিছুই থকতে পারে না, এ নিশ্চয়ই মিথ্যাবাদী, অতএব একে তাড়িয়ে দাও।’
    হে ভ্রাতৃগণ, এইরূপ সংকীর্ণ ভাবই আমাদের মতভেদের কারণ। আমি একজন হিন্দু -আমি আমার নিজের ক্ষুদ্র কূপে বসিয়া আছি এবং সেটিকেই সমগ্র জগৎ বলিয়া মনে করিতেছি! খ্রীষ্টধর্মাবলম্বী তাঁহার নিজের ক্ষুদ্র কূপে বসিয়া আছেন এবং সেটিকেই সমত্র জগৎ মনে করিতেছেন! মুসলমানও নিজের ক্ষুদ্র কূপে বসিয়া আছেন এবং সেটিকেই সমগ্র জগৎ মনে করিতেছেন!
    তাই তো আমি বলি আমার গীতা মেনে-
    "যে ভাবে নদি নালার জল বিভিন্ন ধারা দিয়ে প্রবাহমান হয়ে শেষে এক সমুদ্রে এসে মেলে- সেই রুপ সকল মত সকল পথে একি গন্তব্যে পোঁছাই"- 'আমি' নিয়ে আমরা থাকতে পারি না- 'আমরা' নিয়ে পৃথিবী- আর এই হল আর এস এসের উদ্দেশ্য- 'ভাসুদেসবম কুট্টুম্বাক্কাম'- 'বসুধায় আমরা একি পরিবার'! জয় শ্রী রাম

    ReplyDelete