Friday, 11 September 2015

হিন্দুস্থানে মুসলমানের বিবাহ আইন পৃথক

হিন্দুস্থানে মুসলমানের বিবাহ আইন পৃথক। হিন্দু একটার বেশী বিয়ে করতে পারবে না কিন্তু মুসলমান পুরুষ চারটে বিয়ে করতে পারবে। তাদের স্লোগান হাম পাঁচ (বর ও চার বউ), হামারে পঁচিশ। এই ব্যবস্থা পাশাপাশি আর চলতে দেওয়া উচিত নয়। ভারতে স্যেকুলারিজিমেরআরো মহিমা হচ্ছে, কোন হিন্দু লোক বিশেষ কারনে যদি দুটো বিয়ে করতে যায় তাকে গ্রেফতার করতে পারে, তিন বিবি রাখা কোন মুসলিম পুলিশ অফিসারকে বিচার করে সাত বছরের দন্ড দিতে পারে চার বেগামের মালিক কোন মুসলমান জজসাহেব ?? পাকিস্তান, বাংলাদেশে বাধ্যতামূলকভাবেমুসলমানের জন্মনিয়ন্ত্রণ হচ্ছে, একের বেশী স্ত্রী রাখা যায়না, এখানে কি শুধু তাদের হাতে দেশকে তুলে দিতে হবে বলে এমন সর্বনাশা আইন? প্রাকৃতিক ও মানব সম্পদে ভরপুর ভারত কেনো দিনের পর দিন দুর্বল থেকে দুর্বলতর হচ্ছে এখন তা ভাবার সময় এসেছে। বৈদিক যুগে কর্ম ও গুনভিত্তিক চতুর্বর্ণ ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল ভারতে। প্রতি চার বছর অন্তর কর্ম ও গুনের নিরিখে প্রত্যেকের বর্ণ যাচাই হত। কিছু ব্রাহ্মণ এর বিরোধিতা করে জন্মভিত্তিক জাতব্যবস্থায় বিশ্বাসী হয়ে উঠেন। এমতোবস্থায়ঃ অজ্ঞেয়বাদী প্রতিবাদী আন্দোলন বৌদ্ধ ও জৈনরা শুরু করে, যার প্রায় চারশ বছর পর আস্তিক্য দর্শনে বিশ্বাসী কিছু ব্রাহ্মন আরেক প্রতিবাদী বৈষ্ণব আন্দোলন শুরু করেন খৃষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে। একে অপরের দ্বারা প্রভাবিত এরা সবাই অহিংসার ওপর অতিমাত্রায় গুরুত্ব দিয়ে থাকে যা ভারতীয় সমাজে গভীর প্রভাব ফেলে। যার ফলে আমরা দিনে দিনে দুর্বল থেকে দুর্বলতর হচ্ছি। আজ আমরা আত্মরক্ষায় এতটাই অক্ষম যে দেশরক্ষার কথা চিন্তাই করি না। এই মতবাদ্গুলো যখন প্রতিষ্ঠিত হয় তখন পরমত অসহিষ্ণুতা ও হিংসাকে সম্বল করে বিদেশী আব্রাহামিক ধর্মগুলো যথা ইসলাম বা খৃষ্টানিটির স্থাপনা হয়নি কিন্তু এখন অবস্থার আমূল পরিবর্তন হয়েছে। বিগত হাজার বছর ভারত বিদেশীদের পদানত ছিল মূলতঃ এই সব কারনেই, তাই স্বামী বিবেকানন্দ শক্তি উপাসনার কথা বলেছেন। এর মধ্যে আটশ বছর মুসলমান শাসন চলেছে, যা পশ্চিম বাংলায় প্রায় 560 বছর এবং পূর্ব বাংলায় এখনো চলছে। তবু অনেক হিন্দু নামধারী কবি-সাহিত্যিক এমনকি সাধু-সন্তরা বিন্দুমাত্র কোরান না পড়েই ইসলামের গুনগানে মূখর হচ্ছেন, কোন যুক্তি-তথ্যের ধার না ধরেই। তুর্কিস্তান থেকে আগত মুসলমান অনুপ্রবেশকারী ইখতিয়ারুদ্দিন বখতিয়ার খিলজী 1196 তে বিশ্ব সভ্যতার গৌরব নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস করে। হাজার হাজার নিরস্ত্র বৌদ্ধ সন্ন্যাসীকে জীবন্ত দগ্ধ করা হয় ও বাকি বেশ কয়েক হাজারকে কেটে ফেলা হয়। পারস্যের ঐতিহাসিক "মিনহাজের" মতে, 'আগুন ধরিয়ে দেওয়া ওখানকার বিশাল পাঠাগারের ধোঁয়া কয়েকমাস ধরে পাশের ছোট পাহাড়গুলো ঢেকে রেখেছিল'। ১২০৩ এ অশ্বব্যবসায়ীর ছদ্মবেশে রাতের দিকে আচমকা হানায় প্রায় বিনা বাধায় বাংলার তৎকালীন রাজধানী নদীয়া জয় করে। সেই সময় থেকে থেকে সিরাজউদ্দৌলার শাসনকাল পর্যন্ত এপার বাংলায় মুসলমানদের তান্ডব চলতে থাকে, যা ওপার বাংলায় এখনো বিনা বাধায় চলছে এবং পশ্চিম বঙ্গেও নতুন করে শুরু হচ্ছে। মাঝখানে রাজা গনেশ ও তাঁর দ্বিতীয় পুত্র মহেন্দ্রদেব কয়েকবছরের জন্য অনেক কষ্টে ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়েছিল। ইতিহাস বলে একসময় পৃথিবীর ৩৩% মানুষ বৌদ্ধ হয়েছিলেন যা বর্তমানে মাত্র সাড়ে পাঁচ শতাংশ কারন পূর্ব্বাংলা, তুর্কিস্তান, গান্ধার, পাকিস্তান, কাশ্মীর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি অহিংস বৌদ্ধ প্রধান হওয়ায় যুদ্ধে ঘৃণ্য ভাবে পরাজিত হয়ে আজ সহজেই মুসলমান হয়েছে। তাই নেড়া মাথা বৌদ্ধ ধর্মগুরুদের জোর করে মুসলমান করায় তাদের বাংলায় নেড়া মুসলমান বলে যাদের সামান্য কিছু বিদেশী মুসলমানদের খানদানি বংশধররা অত্যন্ত নিচু চোখে দেখে এবং এটাই বাংলাদেশ যুদ্ধের কারন। যে বৌদ্ধ সহজিয়া-তান্ত্রিকরা অনুরূপভাবে বৈষ্ণব হয়ে যায় তাদেরও পুরোন হিন্দুরা নেড়া-নেড়ি বলে থাকে। বাংলায় এইসব জাতপাত ও অসপৃশ্যতার উচ্ছেদের জন্যই মহাপ্রভু চৈতন্যদেবের গৌড়ীয় বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের উদ্ভব। তিনি অত্যাচারী নবাব হোসেন শাহের কাজীর নির্দেশ অমান্য করে কৃষ্ণনাম কীর্তন করেছিলেন। শুধু তাই নয় হাজার হাজার ভক্ত নিয়ে হিন্দুবিদ্বেষী কাজীর অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রথম বাঙ্গালী হিসেবে মিছিল করেছিলেন, নিরামিশ না মশাল মিছিল। নবদ্বীপের মুসলমান কাজী কোরান মেনে চৈতন্যের কীর্তন নিষিদ্ধ করায় অনেক বৈষ্ণব ভয়ে আসাম ও ওড়িশা পালিয়ে গেল কিন্তু বাকীদের মহাপ্রভু নিজে অভয় দিয়ে বল্লেন কাজীর আদেশ অমান্য করে নিজভূমিতে থেকে নগর সংকীর্তন করবেনঃ “ভাঙ্গিব কাজীর ঘর কাজীর দুয়ারে। কীর্তন করিব দেখি কোন কর্ম করে।। তিলার্ধেকো ভয় কেহ না করিও মনে।” সুবিশাল জনসমুদ্র মার মার কাট কাট করে কাজীর বাড়ির দিকে অগ্রসর হচ্ছে দেখে বাধা দেওয়ার কথা ভুলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে কাজী প্রানভয়ে পালিয়েছিল। মহাপ্রভুর এই পৌরুষের কথা ভুলে গিয়ে বর্তমান ভক্তরা তাই শহরজুড়ে নামকীর্তন করে কিন্তু ভয়ে মুসলমান পাড়া বা মসজিদের সামনের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় নামগান বন্ধ করে দেন। কিছু হিন্দু অবশ্য আজকের মতো সেই তখনো হোসেন শাহের দালালী করেছে। হিন্দু মন্দির ধ্বংসকারী হোসেনকে কবি যশোরাজ খান ‘জগৎ ভূষণ’ এবং কবীন্দ্র পরমেশ্বর‘কলিযুগের কৃষ্ণ উপাধি দিয়েছিলেন। ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার একে মধ্যযুগের বাঙ্গালী কবির দীর্ঘ দাসত্বজনিত নৈতিক অধঃপতন বলে বর্ণনা করেছেন। --- বাংলাদেশের ইতিহাস, দ্বিতীয় খন্ড। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীআম্বেদকরজী এও লিখেছেন যে একসময় এশিয়ার সর্বত্র এমনকি বৃটেনের কেল্টরাও বৌদ্ধ হয়েছিলেন এবং ইসলামের এই হিংসাত্মক আবির্ভাবের কারনেই বহির্বিশ্বে বৌদ্ধ ধর্ম আজ নিশ্চিহ্ন প্রায়। আবার শিখ সম্প্রদায়ের সময়ও অহিংসা মন্ত্র ছিল তাদের অন্যতম "স্তম্ভ", যার সুযোগে মোগলরা তাদের কচুকাটা করতে পেরেছিল। তখন গুরু গোবিন্দ সিং হাতে অস্ত্র তুলে নিয়ে বলেছিলেন, “তরবারিই ভগবান, ভগবানই তরবারি” --- ভারত কোষ, ৩/১৬৩।

1 comment:

  1. পরধর্ম সহিষ্ণুতার ক্ষেত্রে বর্তমান হিন্দুরা যে বিশ্বরেকর্ড করেছে সে বিশ্বপ্রেম দুর্বলের বিশ্বপ্রেম মাত্র, যা দিয়ে ভারতের গরীব, পতিত বা দলিতদের কোন উপকারই হয় না। শুধু লাভ তুলছে খৃষ্টান ও মুসলমান যাদের ধর্মে অহিংসার বালাই নেই। ভারতীয় হিন্দুদের বিশ্বপ্রেম আছে কিন্তু আত্মপ্রেম নেই। আমরা আজও আর্য-অনার্যের দ্বন্দ ঘোচাতে পারিনি, পারিনি হিংসা-অহিংসা বা ব্রাহ্মণ-অব্রাহ্মণের দ্বন্দ ঘোচাতে। স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী, বিবেকানন্দ এবং আম্বেদকর প্রমান করেছেন যে আর্যরা বহিরাগত নয়, তারা ভারতীয় ও আর্য শব্দের অর্থ সংস্কারিত ব্যক্তি। আর্য-অনার্য ভেদটা বৃটিশদের গড়া একটি দ্বিজাতি তত্ত্ব। দুঃখজনক যে অনেক আম্বেদকরপন্থী তথাকথিত দলিত নেতৃবর্গ আম্বেদকরজীর এই সিদ্ধান্ত না মেনে ক্ষতি করছে হিন্দু সমাজের। তারা প্যান ইসলাম ও খৃষ্টান চার্চের সাথে মিলে বলছে আদিবাসী, শুদ্র এবং অতিশুদ্ররা সবাই অনার্য ও তাই দলিত-মুসলিম ঐক্য বা খৃষ্টান হয়ে তারা মোক্ষ পাবে।
    ভারত সেবাশ্রম সংঘের স্বামী নির্মলানন্দ যথার্থ বলেছেন, “পূর্ব বাংলায়, বেলুচিস্তানে, পশ্চিম পাঞ্জাবে, উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে, আসামের শ্রীহট্টে সমগ্রভাবে হিন্দুদের গুরু, গোঁসাই, সাধু, সন্ত এবং ধর্মীয় আশ্রম, আখড়া, মঠ মিশন, মন্দির, উৎসব পার্বণাদি কি কিছু কম ছিল? কিন্তু সেখান থেকে কোটি কোটি হিন্দু বিতাড়িত কেন?” আমাদের দেশের সব অমুসলমান হিন্দু-মুসলিম মিলনের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। খুব
    ভাল কথা, যেন এ দায় শুধু আমাদের হিন্দুদের উপরেই কিন্তু একজন মুসলমানকেও কেউ কোন দিন সর্বধর্ম সমন্বয়ের কথা বলেছে বলে দুর্নাম দিতে পারবে না। কারন কোরান সে কাজ আদোও সমর্থন করেনা।
    ডঃ বি আর আম্বেদকর বলেছেন, মহামানব বুদ্ধদেব কেবলমাত্র যাগ-যজ্ঞের ক্ষেত্রে জীব হত্যা নিষিদ্ধ ঘোষনা করেছিলেন। তিনি প্রয়োজনে জীব হত্যাকে সমর্থন করেছেন --- ‘বুদ্ধা এন্ড হিস ধম্মা’, পৃঃ ৩৪৫। তাই আমরা দেখি জাপানী, কোরিয়ান, থাই প্রমুখ বৌদ্ধরা শুধু যে আমিষ খান তাই নয় দেশ রক্ষার ব্যাপারেও খুব সচেতন। ইসলামের উৎপত্তি সম্বন্ধে গবেষক ডঃ আম্বেদকর বলেছেন, ‘মুসলমানের কাছে প্রতিমা পূজা বা বৌদ্ধ ধর্ম সমার্থক। আরবি ভাষায় বুদ্ধের অপভ্রংশ “বুত” বলে একটা শব্দ আছে মানে দেবমূর্তি। এই বুতের শত্রু হিসেবেই ইসলামের আবির্ভাব। তাই মুসলমান জন্মের প্রধান কাজ প্রতিমা ধ্বংস করা।’ --- ডঃ বাবাসাহেব, রাইটিং এন্ড স্পীচেস, ভলিউম ৩। আফগানিস্তানের বামিয়ানে সুবিশাল বুদ্ধমূর্তি একারনেই ভাঙ্গা হয়। এজন্যই ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের সামনে থেকে বাউল লালন ফকিরের মূর্তি সরিয়ে ফেলা হয় কারন বাংলাদেশের হজ যাত্রীদের নাকি যাওয়া আসার পথে ওটি দেখলে পাপ হতো।........ চলবে

    ReplyDelete