মূল প্রসঙ্গ : কোরান কি আল্লার বাণী ?
বোনাস প্রসঙ্গ : হুর-গেলমান
প্রায় সব মুসলমানই চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করে যে, কোরান আল্লার বাণী; আল্লা তা ফ্যাক্স যোগে মুহম্মদের নিকট পাঠিয়েছে! মুহম্মদ শুধু তা প্রচার করেছে মাত্র। এর কারণ হচ্ছে আমাদের সিনিয়র ধর্মান্ধ মুসলমানরা তাদের জুনিয়র মুসলমানদের এভাবেই শিক্ষা দিয়েছে এবং এখনো দেয়। মুসলমানদেরকে কখনোই শেখানো হয় না কোরান-হাদিস সংকলনের প্রকৃত ইতিহাস। কোরান যে মুহম্মদের মৃত্যুরও বেশ কিছু বছর পর খলিফাদের আমলে এবং হাদিসগুলো প্রায় ৩০০ বছর পর বইয়ের আকারে লিখিত রূপ পেয়েছে, এই ইতিহাস প্রায় কোনো মুসলমানই জানে না, তারা মনে করে কোরান একেবারে পুস্তক আকারেই মুহম্মদের কাছে এসেছে। সুতরাং কোরান মুহম্মদের মুখনিসৃত বাণী নয়, তা আল্লার বাণী আর মুহম্মদের মুখ নিসৃত বাণীগুলো হাদিস। কিন্তু তাদেরকে যখন কোরান সংকলনের ইতিহাস বলা হয় তখন তারা গভীর সন্দেহ নিয়ে অবাক হয়; যদিও বিশ্বাস করে না তার এক একটুও। কারণ এটা বিশ্বাস করলে রিস্ক আছে, পরকালে হুর-গেলমান হারানোর রিস্ক। তখন তারা যুক্তি তর্কে হেরে গেলেও মনে করে, দূর কোরান যেভাবে সংকলন হয় হোক। তাতে আমার কী ? আমি বিশ্বাস করি কোরান আল্লার বাণী আর তা বই আকারেই এসেছে; ব্যস।
হুর-গেলমানের প্রসঙ্গ যখন এসেই গেলো, তখন এ নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক : হুর মানে প্রায় সবাই জানে, এরা হলো স্বর্গ বেশ্যা। একেবারে নিম্নশ্রেণীর বেহেশতিও পাবে কমপক্ষে ৭২ জন করে হুর। এর বাইরে বেহেশতিরা পাবে গেলমান। গেলমান হচ্ছে পুরুষ পতিতা বা হিজড়া। যারা পায়ুপথে সেক্স করিয়ে আনন্দ পায়। মুহম্মদের চিন্তাধারা কী পরিমান নিকৃষ্ট এই একটি ঘটনা থেকে তা বোঝা যায়। পুরুষদেরকে তার ধর্মে আকৃষ্ট করার জন্য সে লুঠপাটের নামে গণিমতের মালের ভাগ দিলো, চারটি বিয়ে করে মিনি পতিতালয় বানানোর সুযোগ দিয়ে বালিকা-যুবতী-পৌঢ়-বৃদ্ধা সকল রকম নারীর দেহের স্বাদ নেবার ব্যবস্থা করে দিলো, প্রচলিত সাধারণ বিয়ের বাইরেও "মুতা বিবাহ" নামক সর্ব নিম্ন তিনদিন মেয়াদী এক অস্থায়ী বিয়ের ব্যবস্থা করে, সরাসরি অর্থের বিনিময়ে, বছরে আরও অসংখ্য নারীকে ভোগ করার ব্যবস্থাপত্র দিলো, দাসীদের ভোগ করার অনুমতি দিলো, সব দিক থেকে পুরুষদেরকে নারীদের থেকে শ্রেষ্ঠ বলে ঘোষণা দিলো; ইহকালে পুরুষদের জন্য এত ব্যবস্থা করার পরও বোধহয় মুহম্মদের মন থেকে এই সংশয় যায় নি যে, লোকজন তার ইসলাম গ্রহন করবে তো ! তাই পরকালের জন্য হুর-গেলমানের লোভও তাকে দেখাতে হলো ।
ইহুদি ও খ্রিস্টান ধর্মে এটা আছে কি না জানি না। তবে হিন্দু ধর্মে উর্বশী, রম্ভা নামে কতিপয় স্বর্গীয় নারীর কথা বলা আছে। যারা স্বর্গের রাজা বা দেবদেবীদের নাচ টাচ দেখিয়ে মনোরঞ্জন করে; কিন্তু সেক্সের কোনো ব্যবস্থা সেখানে নেই। মুহম্মদ এই সকলকে টেক্কা দিয়ে মুলমানদের জন্য করেছে এক অভাবনীয় ব্যবস্থা। কমপক্ষে ৭২ জন করে হুর। এতেও মুহম্মদ সন্তুষ্ট নয়, সে তার উম্মাদদের (উম্মত) জন্য করে রেখেছে আরও ব্যবস্থা, হুরের বদলে গেলমান, যোনীর বদলে পায়ু। এ থেকে আমার মনে হয় মুহম্মদও সমকামী ছিলো অথবা সেই সময় আরবে সমকামী প্রথা চালু ছিলো। না হলে মুহম্মদ এটা জানলো কী করে যে অনেক পুরুষই যোনীর পাশাপাশি পায়ুও পছন্দ করে ? এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই গেলমানের ভূমিকা কে পালন করবে ? তারা কি ফেরেশতারা ? যতদূর জানি লৈঙ্গিক দিক থেকে ফেরেশতারাও হিজড়ার সমতুল্য।
কোরান কি আল্লার বাণী ? এবা সেই প্রসঙ্গে আসি, সুরা আল ফোরকাণ (২৫:৫৯) এ বলা হয়েছে, "আল্লাহ হচ্ছেন একমাত্র তিনিই যিনি আসমানসমূহ ও জমিন সৃষ্টি করেছিলো এবং এদের মাঝখানে যা কিছু আছে তাও।" এই সুরার বক্তব্যে স্পষ্ট যে দ্বিতীয় কোনো ব্যক্তি আল্লাকে কারও সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে। এই ধরণের বাক্য কোরানে আছে শত শত।অথচ বলা হয় কোরানের সমস্ত কথাই আল্লার। তাই যদি হয় উপর্যু্ক্ত আয়াত কি তা প্রমাণ করে ? এই আয়াতে আরও বলা হচ্ছে আসমানসমূহ। কিন্তু বিজ্ঞান বলে আসমান বা আকাশ বলে কিছু নেই। সবই মহাশূন্য। সেখানে আসমানসমূহের প্রশ্নই আসে না। মূর্খ মুসলমানেরা মনে করে, আসমান হচ্ছে ছাদের মতো, যেখানে চন্দ্র সুর্য তারা ঝুলানো আছে। এই জ্ঞানও অবশ্য তারা কোরান থেকে পেয়েছে। কারণ, সুরা আল আম্বিয়ার ৩২ আয়াতে বলা হচ্ছে, "এবং আমি আকাশকে সংরক্ষিত ছাদ করিয়াছি।" তাই মুসলমানদের আর কী দোষ , আল্লার কথায় অবিশ্বাস করে হুর গেলমান হারানোর রিস্ক কে নিতে চায় ?
হুর গেলমানের কথায় এখানে আর একটা কথা মনে পড়ে গেলো। একজন বেহেশতি যখন কমপক্ষে ৭২ জন করে হুর এবং আরও বেশ কিছু গেলমান পাবে। তখন তো তাদের সঙ্গে তার নিয়মিত সেক্স করতে হবে। আর সেক্স করবেই বা না কেনো, বেহেশতে তো নামাজ রোযা হজ্জ যাকাত রুজি রোজগারের কোনো ব্যাপার নেই। শুধু সেক্স আর সেক্স। এই সেক্স করতে তাদের নাকি কোনো ক্লান্তিও আসবে না। কারণ, বীর্যপাতের মতো কোনো ব্যাপার সেখানে নেই। আল্লা বোধহয় প্ল্যান করেই বীর্যপাতের ব্যাপারটাকে এড়িয়ে গেছে। কারণ বীর্যপাত হলে তো আবার হুরদের গর্ভবতী হবার সম্ভাবনা। তখন আবার বাচ্চা কাচ্চা, আবার পৃথিবীর মতো গ্যাঞ্জাম! এর প্রার্থনা, ওর ফরিয়াদ! এ প্রসঙ্গে আরেকটা প্রশ্ন মাথায় এলো, বীর্যপাতই যদি না হয়, তাহলে সেক্স এর মজাটাই বা কী ?
ReplyDeleteযাক গে, এতজন হুর গেলমানদের সঙ্গে সেক্স করতে গেলেও তো একটা সিস্টেম থাকা দরকার। মানে, কার পর কে, অথবা কয় দিন পর পর কার কার পালা, এই সব আর কী ? না হলে হুর গেলমানরা আবার ক্ষেপে যেতে পারে, তাদেরও তো একটা চাহিদার ব্যাপার আছে। হুর গেলমানদের চাহিদা ঠিকমতো পূরণ না হলে তারা আবার আল্লার কাছে বিচার দিতে পারে। তখন আবার আল্লাকে বিচারে বসতে হবে। আবার ঝামেলা। আমার মনে হয় এই ঝামেলা এড়াতে আল্লা নিশ্চয় কোনো ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছে। সেই ব্যবস্থা হতে পারে কাউকে ম্যানেজারির দায়িত্ব দেয়া, যে সিরিয়ালগুলো মেইনটেইন করবে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে এই ম্যানেজারটা কে ? এ ব্যাপারে তো ইতরামি (ইসলামি) ইতিহাসে কিছু পাই না। ইসলাম নাকি আবার পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান; তো এখানে আবার ফাঁক কেনো ? এ ব্যাপারে ইতরামি চিন্তাবিদরা কিছু বলুন। সুষ্ঠু ব্যবস্থা থাকলে আমরা কাফেররাও মৃত্যুর পূর্বে মুসলমান হয়ে মরার চিন্তাভাবনা করতে পারি। কারণ সারাজীবন যা ই করি মুসলমান হয়ে মরলে তো বেহেশত নিশ্চিত। সেই সঙ্গে নিশ্চিত শ খানেক হুর গেলমান। এই চান্স ছাড়ে কে ? আর এই চান্স না ছাড়ার জন্যই ইসলামের তো এত রমরমা। লোভী, লম্পট ও দুর্বল চিত্তের মানুষের জন্য ইসলাম এক মহা টনিক। এ প্রসঙ্গে কোরানের ১১/২৭ আয়াতেই বলা আছে কোন ধরণের লোকেরা ইসলাম গ্রহন করেছে, দেখে নিন সেই আয়াতটি :
"আমাদের দৃষ্টিতে তুমি আমাদের মতো একজন মানুষ ছাড়া আর কিছু্বই নও। আমরা আরো দেখছি যে, আমাদের লোকেদের মধ্যে যারা হীন নীচ, তারাই না ভেবে, না বুঝে তোমার পথ অবলম্বন করছে। আর আমরা এমন কোনো জিনিস দেখতে পাই না, যাতে তোমরা আমাদের অপেক্ষা বিন্দুমাত্র অগ্রসর বরং আমরা তো তোমাদের মিথ্যুকই মনে করি।"
কোরানের ভাষ্য অনুযায়ী এই কথাগুলো ইহুদিরা মুহম্মদকে বলেছে। এখানে একাট বিষয় লক্ষ্যনীয়, মুহম্মদের সময় ঘটা ঘটনাগুলিও কোরানের আয়াতে স্থান পেয়েছে, এই কোরান নাকি আবার পৃথিবীতে মানুষ সৃষ্টিরও বহু বছর আগে আল্লাহ লিখে "লাওহে মাহফুজ" নামে কোনো একটা জায়গায় সেভ করে রেখেছিলো! মুসলমানরা এখানে আবার যুক্তি দেখাবে, যেহেতু আল্লা সর্বজ্ঞানী এবং সবকিছুই জানে, সেহেতু তার পক্ষে মুহম্মদের জীবনের ঘটনাগুলো আগেই জানা অসম্ভব কিছু নয় এবং এ সম্পর্কিত বাণী কোরানে থাকাও অবাস্তব কিছু নয়। এই যুক্তি মেনে নিলে, এটাও মানতে হবে যে, আল্লার কোনো কথা, কোনো সিদ্ধান্ত, কখনোই পরিবর্তন করার কোনো প্রয়োজন হবে না; আল্লা যা বলবে, যে দিক দিয়ে, যে প্রসঙ্গে বলবে, সেটাই বাস্তবতার সাথে মিলতে বাধ্য। কিন্তু তাহলে আল্লা নিচের এই কথাগুলো কোরানে কেনো বললো ?
"আমি যে আয়াত বাতিল করি কিংবা ভুলিয়ে দিই, তার স্থানে তা অপেক্ষা উত্তম জিনিস পেশ করি, কিংবা অন্তত অনুরূপ জিনিস এনে দিই।"- ২/১০৬
"আমি যখন এক আয়াতের স্থানে অন্য আয়াত অবতীর্ণ করি, আর আল্লা ভালোই জানেন যে তিনি কী অবতীর্ণ করেন।"- ১৬/১০১
সর্বজ্ঞানী আল্লাকে এক আয়াতের স্থলে অন্য আয়াত অবতীর্ণ করতে হবে কেনো ? এর স্পষ্ট অর্থ হলো, কোরান আল্লা বলে কেউ লিখে নি, আর এটা কোথাও সেভ করাও ছিলো না। মুহম্মদের যখন যে আয়াতের দরকার হতো, তখনই সে সেটা বানিয়ে বানিয়ে বলতো। না হলে, যে কোরান বলছে, "ধর্মের ব্যাপারে কোনো জোর জবরদস্তি নেই" (২/২৫৬), "তোমার ধর্ম তোমার, আমার ধর্ম আমার" (১০৯/৬); সেই কোরান কিভাবে বলে,
"মুশরিকদের হত্যা কর যেখানেই তাদের পাও এবং তাদের ধরো, ঘেরাও করো এবং তাদের প্রতিটি ঘাঁটিতে তাদের খবরাখবর নেওয়ার জন্য শক্ত হয়ে বসো।
অতঃপর তারা যদি তওবা করে, নামায কায়েম করে ও যাকাত দেয়, তাহলে তাদেরকে তাদের পথ ছেড়ে দাও।"- ৯/৫
ReplyDeleteউপরের এই তিনটি আয়াতের বাস্তবতা হলো, মুহম্মদ যখন মক্কায় ছিলো এবং তার জনশক্তি কম ছিলো, তখন কুরাইশদের সাথে তাকে আপোষ করে থাকতে হচ্ছিলো, তখন সে বলেছে, "ধর্মের ব্যাপারে কোনো জোর জবরদস্তি নেই" (২/২৫৬), "তোমার ধর্ম তোমার, আমার ধর্ম আমার" (১০৯/৬); কিন্তু যেই মদীনায় তার শক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে অমনি তার মুখ থেকে বের হয়েছে মার-কাট-লুঠ সম্পর্কিত আয়াতগুলো।
যে কোরানে একই বিষয়ে দুই ধরণের কথা থাকে এবং যে কোরানে এক সম্প্রদায়ের মানুষকে হত্যা করার জন্য অন্য সম্প্রদায়ের মানুষকে আদেশ- নির্দেশ দেওয়া হয় বা সে ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়, সেটা কিভাবে সৃষ্টিকর্তার বাণী হতে পারে ? আর যে, এই নির্দেশ দিচ্ছে সে ই বা কিভাবে সৃষ্টিকর্তা হতে পারে ?
কোরানে অসংখ্যবার বলা আছে একটি মাত্র শব্দ "কুন" বলার সাথে সাথেই আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী সবকিছু হয়ে যায়। তাহলে যারা কোরানে বিশ্বাস করে না, তাদের যেহেতু আল্লা দুচক্ষে দেখতে পারে না, সেহেতু আল্লা "কুন" ব'লে কেনো সব অমুসলিমকে রাতারাতি ধ্বংস করতে পারে না বা তাদেরকে মুসলমান বানাতে পারে না ? সর্ব শক্তিমান আল্লার নিজের এত শক্তি থাকা সত্ত্বেও, এই অমুসলিমদেরকে মারার দায়িত্ব, আল্লাকে কেনো মুসলমানদের উপর দিতে হবে ?
উপরের এই সব বিষয় বিবেচনা করলে এটা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হয়ে যায় যে, আল্লা বলে কোনো কিছু নেই, আর কোরানও কোনো আল্লার বাণী নয়; সবই মুহম্মদের ভণ্ডামী। হিস্টিরিয়া বা স্কিজোফ্রেনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে মুহম্মদ যা বলেছে, সেগুলো কোরান, আর স্বাভাবিক অবস্থায় যা বলেছে ও করেছে, সেগুলো হাদিস।
জয় হিন্দ।