পুত্রবধূ জয়নবের সঙ্গে নবী মুহাম্মদের স্বর্গীয় বিবাহ ও পুত্র জায়েদের জীবন ধ্বংস। মহানবী (সঃ)-র স্ত্রী জয়নব অহংকার করতঃ অন্য স্ত্রীদেরকে (সতীনদেরকে) বলতেন, “তোমাদের বিবাহের ব্যবস্থা করেছিলেন তোমাদের পিতারা, কিন্তু আমার জন্য বিবাহ ঠিক করেছিলেন সাত আসমানের উপর থেকে আল্লাহ্। ” উপরোক্ত উক্তির মাধ্যমে জয়নবের মহানবীর অন্যান্য উপর নিজ শ্রেষ্ঠত্ব জাহির করতেন। মূলকথা ছিলঃ আল্লাহ্ জয়নবের বিবাহ ও পারিবারিক জীবন নিয়ে নিজ দায়িত্বে যেরূপ পরিকল্পনা করেছিলেন মুহাম্মদের অন্য স্ত্রীগণ সে অভাবনীয় সুযোগ পান নি। মহানবীর সাথে জয়নবের বিবাহের ঘটনাটি ফলক ও পবিত্র কোরানে সযত্নে লিপিবদ্ধ আছে। জয়নবের স্বর্গীয় বিবাহ ব্যক্তিগত ব্যাপার মাত্র ছিল না। এবং তা আজও মুসলিম সমাজকে বিশেষ প্রভাবিত করে যাচ্ছে। জয়নবের প্রতি নবী মুহাম্মদের যৌন-বাসনাকে পরিতৃপ্ত করার নিমিত্তে দত্তক গ্রহণের মত অত্যন্ত উন্নত এক আরব প্রথাকে নিষিদ্ধ করতে বাধ্য হয়েছিল আল্লাহ্। তার পরিবর্তে নৈতিকভাবে এক নিকৃষ্ট বিধান চালু করতে হয়েছিল, যাতে করে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ নারীর বক্ষদুগ্ধ পান করতে পারে। এই কাহিনীর আরেকটি ফল হচ্ছে, মুসলমানরা আজও কোরানের “পর্দা (হিজাব) বিধান” সম্পর্কে হতবুদ্ধি ও বিভক্ত, যা নারীদেরকে ইসলামের অন্ধকার গহ্বরে আবদ্ধ রেখেছে। কোরান ও নবীর বিখ্যাত জীবনীগুলিতে যে ঐতিহাসিক ঘটনাগুলি ভালভাবে লিপিবদ্ধ আছে এবং যেগুলির যথার্থতা সম্পর্কে কোন মুসলমান প্রশ্ন করতে পারে না, এ নিবন্ধে সেসব সূত্র থেকে উদ্ধৃতি দেওয়া হবে। তবে বিশ্লেষণটা আমার ব্যক্তিগত। রচনাটি এক ইসলামী বিখ্যাত প্রেম কাহিনী, আরও ভালভাবে বললে, ইসলামী যৌন- লালসাকে স্বরূপ উপলব্ধির চেষ্টা। জয়নব বিন্তে জাহ্শ তার মায়ের দিক থেকে মুহাম্মদের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিলেন। জয়নব মুহাম্মদের চাইতে তেইশ বৎসরের ছোট ছিলেন। মক্কায় থাকাকালীন মুহাম্মদ তাকে অল্প বয়স থেকেই দেখে আসছিলেন এবং তার সৌন্দর্য লক্ষ্য করেছিলেন। এ কারণেই মুহাম্মদ তাকে পুত্র জায়েদের স্ত্রী হিসাবে পছন্দ করেছিলেন বলে মনে হয়। জায়েদ ইব্ন হারিথা ছিলেন মুহাম্মদের প্রথম স্ত্রী খাদিজার একজন সিরীয় আরব দাস। বিয়ের পর খাদিজা জায়েদকে মুহাম্মদের হাতে তুলে দেন, এবং জায়েদকে খুব পছন্দ করতেন বিধায় পৌত্তলিক মুহাম্মদ জায়েদকে দত্তক পুত্র হিসাবে গ্রহণ করেন। দত্তক প্রথাকে আরবরা খুব সম্মানের চোখে দেখত। আরব প্রথানুযায়ী দত্তক সন্তানরা পিতা-মাতার আপন সন্তানদের ন্যায় অধিকার ভোগ করত। জায়েদ তার প্রভুর প্রতি দৃষ্টান্তমূলক বাধ্যতা ও আনুগত্য প্রদর্শন করেছিলেন এবং তার সেবায় অসাধারণভাবে নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। বিনিময়ে মুহাম্মদও জায়েদের প্রতি সদয় ছিলেন, এবং এই সদয়তার পরিমাণ এত বেশী ছিল যে পরিণতিতে মুহাম্মদ তাকে নিজ পুত্র হিসাবে গ্রহণ করেন। ৬২৯ খ্রীষ্টাব্দের দিকে মদীনায় মহানবীর মধ্যস্থতায় জায়েদ ও জয়নবের বিবাহ হয়। সে সময় মুহাম্মদ আরবের এক বিখ্যাত রাজনৈতিক নেতায় পরিণত হয়েছিলেন। প্রাচীনকাল থেকে চলে আসা কিছু কাহিনীতে দাবী করা হয় যে, জয়নব ও তার ভাই জায়েদের তুলনায় জয়নবের শ্রেণী-অবস্থানগত শ্রেষ্ঠত্বের কারণে জায়েদের সঙ্গে জয়নবের বিবাহে আপত্তি জানিয়েছিলেন। এমনও দাবী করা হয় যে, জয়নব প্রকৃতপক্ষে জায়েদের পরিবর্তে মুহাম্মদের সঙ্গে বিবাহে আগ্রহী ছিলেন। মদীনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসাবে মুহাম্মদের সঙ্গে বিবাহে জয়নবের এরূপ আগ্রহ যে থাকতে পারে, সেটা বোধগম্য। কিন্তু শ্রেণীগত বিষয়টি সম্পর্কে সন্দেহের অবকাশ আছে। কারণ দত্তক হবার সঙ্গে সঙ্গে জায়েদ আপনাআপনি তার পালক পিতার সামাজিক শ্রেণী মর্যাদা লাভ করেছিলেন। উপরন্তু জায়েদ আফ্রিকান দাস ছিলেন না, বরং ছিলেন একজন আরব যুদ্ধবন্দী। জায়েদ ও জয়নবের বিবাহ সম্পন্ন হবার পর স্বামী-স্ত্রী মদীনায় তাদের নিজ বাসগৃহে বাস করতেন। একদিন জায়েদ যখন বাড়ীর বাইরে ছিলেন, তখন অপ্রত্যাশিতভাবেমুহাম্মদ তাদের বাসগৃহে আসেন। ঘরের ভিতর জায়েদ আছে কিনা দেখার জন্য দরজার ফাক দিয়ে মুহাম্মদ উকি মারলে ঘরের ভিতরে থাকা প্রায়-নগ্ন জয়নবের দেহ দেখতে পান। মুহাম্মদ প্রায়-উলঙ্গ পরিপূর্ণ -যৌবনা সুন্দরী জয়নবের দেহসৌষ্ঠব দেখে হতচকিত হন এবং তাঁর মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসেঃ “সকল প্রশংসা আল্লাহ্র, হৃদয় যেভাবে চায় তিনি সেভাবে বদলে দিতে পারেন। ” তারপর তিনি ফিরে যান। মুহাম্মদ যখন জয়নবকে জায়েদকে বিবাহ করতে বলেছিলেন সে সময়ে মুহাম্মদের অনুভব থেকে এই ‘প্রার্থনা’র অর্থ ভিন্ন। অন্যকথায় আগে তিনি জয়নবের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন না, কিন্তু এখন আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। প্রশ্ন হচ্ছেঃ জয়নবের মাঝে হঠাৎ কী পরিবর্তন এসেছিল, যা এখন মুহাম্মদকে আকৃষ্ট করল? এটা স্পষ্টত যে, মুহাম্মদ ঘরের ভিতর উঁকি মেরে জয়নবের অবশ্যই তার ব্যক্তিত্বের কোন পরিবর্তন দেখেন নাই, দেখেছিলেন যৌন আবেদনময় দেহসৌষ্ঠবের অধিকারী এক অর্ধনগ্ন নারীকে। জয়নবকে দেখে মুহাম্মদের মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসা উক্তি-সহ পুরো ঘটনা জয়নব স্বামী জায়েদকে বলেছিলেন। বেশীর ভাগ সংসারে একই পরিবারের নারী ও পুরুষ সদস্যরা কখনো কখনো একে অন্যকে বিব্রতকর অবস্থায় দেখে ফেলে। এ ধরনের ঘটনা দেখার তারা সাধারণত তা উপেক্ষা করে, বা সম্পূর্ণরূপে ভুলে যাবার চেষ্টা করে – যাতে তা কোন ক্ষতিকর প্রভাব না ফেলে পারিবারিক জীবনে। জয়নবের দরজায় ঘটিত সে ঘটনায় মুহাম্মদ ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তি হলে দূর-প্রসারী কোন ফলাফল ছাড়াই সেখানেই তার সমাপ্তি ঘটত। আরব্য উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলিতে এবং অন্যান্য কিছু মুসলিম রাষ্ট্রে নারী ও পুরুষের মধ্যে মেলামেশার পথ কঠোরভাবে বন্ধ করে রাখার ফলে কিছু সংখ্যক মুসলমান যৌনতার ব্যাপারে বন্য জানোয়ারের মত আচরণ করে। উদাহরণস্বরূপ সৌদী আরবে কোন নারীর পা দেখেই পুরুষরা যৌন-উত্তেজনা বোধ করতে পারে। অস্ট্রেলীয় ইমাম তাজ আল-হিলালী সারা শরীর কাপড় দিয়ে না-ঢাকা নারীদেরকে খুলে রাখা মাংস হিসাবে বর্ণনা করেছেন। অন্য কথায় তারা হচ্ছে শিকারীর জন্য লোভনীয় খাদ্য।
No comments:
Post a Comment