সমীর কুমার মন্ডল মহাশয় লিখেছেন এটি।
(গীতা vs কুরাণের তুলনাভিত্তিক আলোচনা)
দুই গ্রন্থের দৃষ্টিতে ঈশ্বরের গুণগত বৈশিষ্ট্য (পর্ব-১)
-----------------------
(১)
*কুরাণের শিক্ষা ৩.২ – এক মহান আল্লাহ তায়ালা, তিনি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, (তিনি) চিরঞ্জীবি, (তিনি) চিরস্থায়ী।
*গীতার শিক্ষা ১০.৮- আমি জড় ও চেতন জগতের সব কিছুর উৎস। সব কিছু আমার থেকেই প্রবর্তিত হয়। সেই তত্ত্ব অবগত হয়ে পণ্ডিতগণ শুদ্ধ ভক্তি সহকারে আমার ভজনা করেন।
-------------------------
(২)
*কুরাণের শিক্ষা ৩.৬২ – এই হচ্ছে সঠিক (ও নির্ভুল) ঘটনা। আল্লাহ তায়ালা ছাড়া দ্বিতীয় কোনো মাবুদ নাই, নিসন্দেহে আল্লাহ তায়ালা পরম শক্তিশালী ও প্রজ্ঞাময়।
*গীতার শিক্ষা ৯.৪- অব্যক্তরূপে আমি সমস্ত জগতে ব্যাপ্ত আছি, সমস্ত জীব আমাতেই অবস্থিত কিন্তু আমি তাতে অবস্থিত নই।
---------------------
(৩)
*কুরাণের শিক্ষা ২.৮৯ – যখনি তাদের কাছে আল্লাহর কাছ থেকে কিতাব নাযিল হলো যা তাদের কাছে মজুদ কিতাবের সত্যতা স্বীকার করে, (তা ছাড়া) এর আগে তারা নিজেরাই (সমাজের) অন্যান্য কাফেরদের ওপর বিজয়ী হওয়ার জন্যে (এ কিতাব ও তার বাহকের আগমন) কামনা করছিলো কিন্তু আজ যখন তা তাদের কাছে এলো এবং যা তারা যথাযথ চিনতেও পারলো- তাই তারা অস্বীকার করলো, যারা (আল্লাহর কিতাব) অস্বীকার করে তাদের ওপর আল্লাহর অভিশাপ নাযিল হোক।
*কুরাণের শিক্ষা ৩.৪- মানব জাতিকে (সঠিক) পথ প্রদর্শনের জন্যে ইতিপূর্বে (আল্লাহ তায়ালা আরো কেতাব নাযিল করেছেন) তিনি (হক ও বাতিলের মধ্যে) ফয়সালা করার মনদন্ড (হিসাবে কোরআন) অবতীর্ণ করেছেন (তা সত্ত্বেও) যারা আল্লাহ তায়ালার নিদর্শনসমূহকে অস্বীকার করবে, তাদের জন্য রয়েছে কঠোর শাস্তি, আল্লাহ তায়ালা অসীম ক্ষমতার মালিক, তিনি চরম প্রতিশোধ গ্রহণকারীও বটে!
*গীতার শিক্ষা ৯.২৯- আমি সকলের প্রতি সমভাবাপন্ন। কেউই আমার বিদ্বেষ ভাবাপন্ন নয় এবং প্রিয়ও নয়। কিন্তু যারা ভক্তিপূর্বক আমাকে ভজনা করেন, তারা আমাতে অবস্থান করেন এবং আমিও তাদের মধ্যে বাস করি।
---------------------
(৪)
*কুরাণের শিক্ষা ২.৯৮ – যারা আল্লাহর শত্রু, শত্রু তার (বাণীবাহক) ফেরেশতার ও নবী রসূলের, (শত্রু) জিবরাঈলের ও মীকাঈলের, (তারা একদিন এই কথাটা বুঝতে পারবে) স্বয়ং আল্লাহ তায়ালাই হচ্ছেন কাফেরদের বড় শত্রু।
*কুরাণের শিক্ষা ৪.৪৮ – নিসন্দেহে আল্লাহ তায়ালা কখনো (সে গুনাহ) মাফ করবেন না (যেখানে) তার সাথে কাউকে শরীক করা হয়, এ ছাড়া অন্য সব গুনাহ তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দেন, যে ব্যাক্তি আল্লাহর সাথে কাউকে অংশীদার বানালো সে সত্যিই (আল্লাহর ওপর) মিথ্যা আরোপ করলো এবং একটা মহাপাপে (নিজেকে) জড়ালো!
*গীতার শিক্ষা ৯.২৩- হে কৌন্তেয়! যারা অন্য দেবতাদের ভক্তি এবং শ্রদ্ধা সহকারে তাদের পূজা করে, প্রকৃতপক্ষে তারা অবিধিপূর্বক আমারই পূজা করে।
----------------------
(৫)
*কুরাণের শিক্ষা ৪.৫২ – এরাই হচ্ছে সেই (হতভাগ্য) মানুষগুলো, যাদের ওপর আল্লাহ-তায়ালা অভিশাপ করেছেন, আর আল্লাহ তায়ালা যার ওপর অভিশাপ পাঠান তার জন্যে তুমি কখনো কোনো সাহায্যকারী পাবে না।
*গীতার শিক্ষা ৯.৩০- অতি দুরাচারী ব্যাক্তিও যদি অনন্য ভক্তি সহকারে আমাকে ভজন করেন, তাকে সাধু বলে মনে করবে কারণ তার দৃঢ় সংকল্পে তিনি যথার্থ মার্গে অবস্থিত।
--------------------
(৬)
*কুরাণের শিক্ষা ৩৩.৬৪ – তবে (কেয়ামত যখনই আসুক) আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই কাফেরদের ওপর (আগেই) অভিশাপ দিয়েছেন এবং তাদের শাস্তির জন্যে প্রজ্বলিত আগুনের শিখাও প্রস্তুত করে রেখেছেন।
*কুরাণের শিক্ষা ৩৩.৬৫ – সেখানে তারা চিরদিন থাকবে (সেখান থেকে বেরিয়ে আসার ব্যাপারে) তারা কোনো রকম অভিভাবক ও সাহায্যকারী পাবে না।
*গীতার শিক্ষা ১০.৩- যিনি আমাকে জন্মরহিত, অনাদি ও সমস্থ গ্রহলোকের মহেশ্বর বলে জ্ঞান অর্জন করেছেন তিনিই কেবল মানুষদের মধ্যে মোহশূন্য হয়ে সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হন।
No comments:
Post a Comment