Friday, 4 September 2015

৩০০টি হিন্দু পরিবারভুক্ত মানুষ গত তিন বছর ধরে দুর্গাপূজা করতে পারছেন না

আর ক’দিন পরেই পশ্চিমবঙ্গের বাঙ্গালী হিন্দুর জাতীয় উৎসব শারদীয়া দুর্গাপূজা। সারা বাংলার হিন্দুরা মেতে উঠবেন আনন্দে। নুতন জামাকাপড়ের গন্ধ, হৈ হুল্লোড়, জমাটি আড্ডা, পলিটিক্স, রাত জেগে ক্লান্ত চোখে পাড়া পরিক্রমা, লক্ষ টাকার আলোর রোশনাই, জমকালো প্রতিমা ও মন্ডপ সজ্জা – সব থাকবে, সব! আপনিও তো ওই কয়টা দিন খুব আনন্দ করবেন তাই না? আচ্ছা, যদি কখনও শোনেন যে, আপনারই পাশের পাড়ায় মুসলমানেদের হুঙ্কারে দুর্গাপূজা বন্ধ হয়ে গেছে, তারা আর পূজা করতে পারছে না, বরং আপনার পাড়াতে অঞ্জলি দিতে আসছে। তখনও কি এমন পরম নিশ্চিন্তে আনন্দে মেতে থাকতে পারবেন? আজ তাদের পূজা বন্ধ হয়েছে বলে, কাল যে আপনার পূজাও বন্ধ হবে না বা আপনিও আগামী দিনে আপনার ওই হতভাগ্য প্রতিবেশীদের মত অন্য পাড়ায় গিয়ে অঞ্জলি দিতে বাধ্য হবেন না আপনি নিশ্চিত? কিন্তু এ কেমন ধারা পূজা? যেখানে এই বাংলার মাটিতেই একদিকে যখন কোটি কোটি টাকা খরচ করে দুর্গা পূজা হবে, তখন আরেকদিকে বেশ কিছু জায়গায় মুসলমানের বাধাদানের কারণে দুর্গা পূজা করাই যাবে না? না – এ এমন নয় যে, একই পাড়ার মধ্যে পাঁচটা দুর্গাপূজা হচ্ছে, যেখানে একটির অনুমতি বাতিল করলেও তেমন কিছু যাবে আসবে না। যেখানকার কথা আজ আপনাদের বলতে চলেছি, তার তিন থেকে চার কিলোমিটারের মাঝে আগমনীর আগমন বার্তা নিয়ে কাশ ফুল হয়তো ফুটবে, কিন্তু হায়! কোন শারদীয়ার ঢাকের শব্দই আর শোনা যাবে না। ... আর যথারীতি দুর্ভাগ্যের সঙ্গে এই বাংলার প্রেশ্যা মিডিয়ার দলও সে বিষয়ে একটি শব্দও উচ্চারন করবে না! এবারে বিষয়বস্তুতে নজর দেওয়া যাক। হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ বীরভূম জেলার ঝাড়খণ্ড লাগোয়া নলহাটি থানার কাংলাপাহাড়ি গ্রামের দিকে তাকিয়ে দেখুন। ৩০০টি হিন্দু পরিবারভুক্ত এই গ্রামের মানুষ গত তিন বছর ধরে দুর্গাপূজা করতে পারছেন না। কারণ?? সেই গ্রামে বসবাসকারী মাত্র ২০ ঘর মুসলমানের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে মেরুদন্ডহীন রাজ্যপ্রশাসনের ক্ষমতা নেই যে, তারা হিন্দুদের পূজার অনুমতি প্রদান করেন! ভাবতেও অবাক লাগে, সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের পূজার জন্যে পারমিশন লাগে। অথচ ঐ গ্রামে মহামান্য আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মসজিদের মাইকে আজান হতে পারে, ঈদে গো-কুরবানি হতে পারে, কিন্তু সংবিধান সম্মত ভাবে কোন পূজা হতে পারে না! এই আমাদের ধর্মনিরপেক্ষতারস্বরূপ! উদ্বেগ আরও ঘনীভূত হয়, যখন এটা পরিষ্কার হয়ে যায় যে, এই রাজ্যপ্রশাসন অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আজ মৌলবাদী ইসলামী শক্তির ‘জেহদি দাবী’র কাছে সম্পুর্ন ভাবে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে! পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী মমতা বন্দোপাধ্যায় কি এইভাবে পশ্চিমবঙ্গের মৌলবাদী ইসলামীকরণের পথ প্রশস্ত করছেন না? এ কি পশ্চিমবাংলাকে ভবিষ্যতের ‘পশ্চিম বাংলাদেশে’ রূপান্তরেরই অনুষঙ্গ নয়? আর তার চেয়েও যেটি সবচেয়ে চিন্তার বিষয় যে, এই অশনি সংকেত কি আম বাঙ্গালী হিন্দুর আসন্ন দুর্গাপূজার আনন্দে বিন্দুমাত্র প্রভাব ফেলতে পারবে? সে চরম স্ফুর্তিকালে, তাদের কি এই বিষয়টি নিয়ে ভাববার একটুও অবসর মিলবে? http://www.dainikjugasa/nkha.in/indexnew.php

No comments:

Post a Comment