এই শতাব্দীর এক অকুতোভয় অনন্যসাধারন বামপন্থী কথা সাহিত্যিক শ্রী 'হুমায়ূন আজাদ' ও বাংলাদেশের হিন্দু নিপীড়নের উপর তার অমর কালজয়ী সৃষ্টিঃ
"পাক সার জমিন সাদ বাদ" -- (পর্ব - ১8)
----------------------------------------------------------
আমার দু-নম্বর জিহাদি মোঃ হাফিজুদ্দিন, তালেবান হওয়ার জন্য যে একবার আফগানিস্তানে গিয়েছিল, সে বলছিলো, ‘হুজুর গোটা পঞ্চাশেক মালাউন(হিন্দু) ফালাই দিতে হইব।’
আমি বলেছিলাম’ ‘গোটা পঞ্চাশেক ফেলে কি হবে?’
জিহাদি মোঃ মুস্তাকিম জিজ্ঞেস করেছিল, ‘তাইলে হুজুর, কয়ডা ফালামু?’
আমি বলেছিলাম, ‘দুটি বা দশটি নয়, সবগুলোকেই ফেলে দিতে হবে’।
ওরা ভয় পেয়ে আর্তনাদ করে উঠেছিল। ‘হুজুর, সবগুলিরে ফালামু?’
ওরা আর্তনাদ করতে পারে, এটা মাকে বিস্মিত করেছিল; ওদের মুখ দেখে আমার কখনো মনে হয়নি ওরা এমন শব্দ করতে পারে। ওদের অশ্রুনালিতে কোনো অশ্রু আছে বলে আমার মনে হয়নি।
আমি বলেছিলাম, ‘হ্যাঁ, সবগুলোকেই’।
ওরা বলেছিলো, ‘এক রাইতে সব গুলোরে ফালাইতে পারুম?’
আমি বলেছিলাম, ‘এক রাত কেন, আমাদের সহস্র রাত রয়েছে’।
ওরা এবার শান্ত হয় বলে, ‘তাইলে ফালাইতে কষ্ট হইব না’।
আমি বলেছিলাম, ‘কিভাবে ফেলবে?’
ওরা বলেছিলো, ‘হুজুর, খালি চাক্কু মারুম শিনার বাও দিকে, আর হলকুম দুই ভাগ কইর্যা ফালামু’।
আমি বলেছিলাম, ‘চাক্কু মেরে ফেলতে হবে না, তাতে ঘর বড়ি নোংরা হবে, লাশের গন্ধ বেরোবে, একবারে খুনের থেকে ওদের চিরকালের জন্য খুন করতে হবে, যাতে ওরা দেশে না থাকে, আর থাকলেও যেনো না থকে’।
ওরা ব্যগ্র হয়ে জিজ্ঞেস করেছিলো, ‘সেইডা কেমনে করুম হুজুর?’
আমি বলেছিলাম, ‘হাত দিয়ে দ্যাখো তোমাদের দুই রানের মধ্যে কি আছে, কি ঝুলছে?’
তারা হাত দিয়ে দৃঢ় দন্ড অনুভব করে শরম পায়; সেটি ঝুলছিল না, দাঁড়িয়ে ছিল কুতুবমিনারের মত’।
আমি জিজ্ঞেস করি, ‘কি আছে ওখানে?’
ওরা বলে, ‘হুজুর, আমাগো লিঙ্গ’।
আমি বলি, ‘ওটি লিঙ্গ নয়, পিস্তল, এম-১৬। ওইটা খোদার দেওয়া পিস্তল, এম১৬। ওইটা চালাতে হবে- মালাউন মেয়েগুলোর পেটে মুমিন মুছলমান ঢুকিয়ে দিতে হবে, জিহাদের এইটাই নিয়ম। আর মালাউনদের ঘরভরা সোনাদানা, কলসিভরা টাকা, ওইগুলো নিয়ে আসতে হবে’।
ওরা আনন্দে চিৎকার করে উঠেছিল, ‘আল্লাহু আকবর, নারায়ে তকবির’।
ক্রমশ...
No comments:
Post a Comment