ভারতের সফল রাষ্ট্রপতি এবং সফল পদার্থবিদ ড. এপিজে আব্দুল কালামের মৃত্যুতে সাতদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে সরকার। আব্দুল কালামের মৃত্যুতে ভারতীয় বামপন্থী থেকে শুরু করে বাংলাদেশের পিনাকীদের বিদ্রূপ চোখে পড়ল। স্বভাবসুলভ ভাবে তারা ড. কালাম কে সম্রাজ্যবাদের দালাল উপাধি তে ভূষিত করল! তবে মুসলমানরা পড়ে গেছে বড় ফাপরে। চিরকুমার নিরামিষভোজী সনাতনধর্মের প্রশংসক কালাম যে একজন মুনাফিক তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু সেকথা স্বীকার করলে "ভারতে মুসলমানের অবদান" বলে জাহির করা যাবে না। মরে গিয়েও ভীষণ এক ঈমানের পরীক্ষায় ফেলে দিয়ে গেলেন কালাম সাহেব!
এদিকে একদল হিন্দু এটা প্রমাণে ব্যস্ত যে কালাম জন্মগত ভাবে মুসলিম হলেও তিনি হিন্দুরীতি মেনে চলতেন; তাই তাঁকে হিন্দু বলা চলে। হিন্দু-মুসলমানের টানাটানি তে মৃত কালামের জাতীয়তা আজ সঙ্কটে পড়ে গেছে!
হিন্দু সমাজে সাধারণত গুণীজনের ধর্মপরিচয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে দেখা যায় না। যারা আজ কালামের ধর্মপরিচয় নিয়ে বেশি টানাটানি করছেন তারা মুসলিমদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এমনটা করছেন বলে আমি বিশ্বাস করি। কারণ এই বদ অভ্যাস কেবল ধর্মান্ধ মুসলিম সমাজেই লক্ষ্যনীয়। যেমনঃ কোনো মুসলিম কবি-সাহিত্যিক কিংবা বিজ্ঞানী কে তারা "মুসলিম কবি" "মুসলিম বিজ্ঞানী" বলতে পছন্দ করে। মডারেট প্রগতিশীল মুসলমানরা পর্যন্ত নজরুলকে মুসলমান কবি বলে কিন্তু রবি ঠাকুরকে কোনো তথাকথিত উগ্র হিন্দুর মুখেও বলতে শুনিনি যে তিনি 'হিন্দু কবি'। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় একবার বাংলাদেশে এলে এক বাংলাদেশী মুসলিম অটোগ্রাফের জন্য কাগজ এগিয়ে সুনীল কে জানায়, "হিন্দু লেখকদের মধ্যে একমাত্র আপনার লেখায় আমি পছন্দ করি!" সুনীল সেদিন তাঁর মুসলমান ভক্তের কথা শুনে বেশ বিস্মিত হয়েছিলেন। কিন্তু আজ আর বিস্মিত হবার উপায়টুকু নেই! খোঁজ নিয়ে দেখুন, "বিজ্ঞানে মুসলমানদের অবদান" টাইপের বইয়ের অভাব হবে না। কিন্তু "হিন্দু বিজ্ঞানী" "খ্রিষ্টান বিজ্ঞানী" "ইহুদী বিজ্ঞানী" বলে কারো পরিচয় মিলবে না।
আব্দুল কালাম কে আজ যারা মুনাফিক বলে গালমন্দ করছে তারায় একদিন কালামের মাজার বানিয়ে ফেলবে। কালাম কে সাচ্চা মুসলমান বলে জাহির করে বলবে, "দ্যাখো! মুসলমানরা ভারত কে কত্ত ভালবাসে!" যেমন একসময়ের মুনাফিক নজরুল আজ মুসলমানদের নিকট পীর ফকিরদের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়!
(সংগৃহীত পোষ্ট)
No comments:
Post a Comment