প্রসঙ্গঃ ইয়াকুব মেননের ফাঁসি; ধর্মনিরপেক্ষতারধ্বজাধারীদের আসল চেহারার বহিঃপ্রকাশ।
আজ ভোরে মুম্বই বোমা হামলায় অভিযুক্ত ইয়াকুব মেননের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। ১৯৯৩ সালে মুম্বই এর তিনটি আলাদা আলাদা স্থানে বোমা হামলা চালানো হয়। শেয়ার বাজার এলাকা, সিনেমা হল এবং শপিং মলে ছোড়া শক্তিশালী বোমার আঘাতে মোট ২৫৭ জন মারা যায় এবং আহত হয় কমপক্ষে সাত শতাধিক মানুষ। তিনটি স্থানে পরপর বোমা হামলায় অভিযুক্ত তিনজন সন্ত্রাসী হলঃ ইয়াকুব মেনন, তার ভাই টাইগার মেনন এবং দাউদ ইব্রাহিম। বোমা হামলার পর এই তিনজন পাকিস্তানে পালিয়ে যায়। কিন্তু ১৯৯৪ সালে ইয়াকুব মেনন ভারতে ফেরত এলে পুলিশ তাকে আটক করে। এরপর দীর্ঘদিন জেলখানায় আটক থাকার পর ২০০৭ সালে ইয়াকুব কে ফাঁসির আদেশ দেয় আদালত। কিন্তু রাজনৈতিক এবং আইনি জটিলতাপূর্ণ কারণে ফাঁসি স্থগিত রাখা হয়। অবশেষে আজ বিভিন্ন চাপের মুখেও মুম্বই বোমা হামলার প্রধান অভিযুক্ত ইয়াকুব কে ফাঁসি দেওয়া হল।
ধর্মনিরপেক্ষতারধ্বজাধারীরা শুরু থেকেই ইয়াকুব কে নির্দোষ দাবি করে আসছিল। ভারতের চল্লিশ জন চিহ্নিত বুদ্ধিজীবী তার মুক্তির দাবি জানায়। মার্কণ্ডেয় কাটজুর মত বুদ্ধিজীবী, সীতারাম ইয়েচুরির মত কম্যুনিস্ট নেতা থেকে শুরু করে সলমন খান সকলেই ইয়াকুব কে নির্দোষ দাবি করে। আসাদউদ্দীন ওয়েইসির মত উগ্রবাদী মুসলিম নেতারা তো দাঙ্গার হুমকি দিয়ে রেখেছে। আবার কারো দাবি, ইয়াকুব বোমা হামলার সাথে জড়িত থাকলেও সে আত্মসমর্পণ করেছিল তাই তাকে ফাঁসি দেওয়া যাবেনা।
প্রশ্ন হলঃ সে যদি নির্দোষই হবে তবে কেন পাকিস্তানে পালিয়ে গেল? আত্মসমর্পণ করলে কেন দীর্ঘ একবছর পলাতক ছিল?
সবচেয়ে আশ্চর্যজনক অভিযোগ, ইয়াকুব মেনন কে নাকি সাম্প্রদায়িক কারণে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে! এমন প্রতিক্রিয়া আসছে মানবতাবাদী বুদ্ধিজীবীদের থেকে। অবাক হতে হয় এই কথিত মানবতাবাদীদের মানবতার নমুনা দেখে। ২৫৭ জন নিরপরাধ মানুষের লাশ দেখে এদের মানবতা জাগেনা অথচ একজন খুনি সন্ত্রাসীর ফাঁসি হবে জেনে এদের মানবতা সাঁতার খায়! তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম, মুসলমান বলেই ইয়াকুব মেনন কে ফাঁসি দেওয়া হল। কিন্তু মুম্বই হামলার কারণ কি ছিল আমরা কি তা ভুলে যাব? ৯২ এর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের প্রতিশোধ নিতেই ইয়াকুবরা মুম্বইয়ের নিরীহ নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে। হিন্দুদের প্রতি আক্রোশ বা বিদ্বেষ থেকেই হামলা চালানো হয়েছিল। সন্ত্রাসের কারণ সাম্প্রদায়িক হতে পারে কিন্তু আইন কখনো সাম্প্রদায়িক হতে পারে না। ধর্মনিরপেক্ষতারনামে কথিত মানবতাবাদী বুদ্ধিজীবীরা একজন মুসলিম মৌলবাদী জঙ্গি সন্ত্রাসীর পক্ষ নিয়ে নিজের জাত চিনিয়ে দিয়েছে।
যারা দাবি করছে, কেবল মুসলিম বলে ইয়াকুব কে ফাঁসি দেওয়া হল তাদের একটি পরিসংখ্যান জেনে রাখা উচিত। ভারতীয় বিচারবিভাগ আজ পর্যন্ত মোট ১৩৪২ জন কে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছে যার মধ্যে মাত্র ৫২ জন মুসলিম। গড়ে মোটামুটি তিরিশ শতাংশ; কিন্তু ভারতের শতকরা ৬০ ভাগ অপরাধ মুসলিমরা ঘটিয়ে থাকে। সূত্রঃ http:// www.newindianexp ress.com/ thesundaystandar d/ 72-Muslims-Hange d-in-India-agai nst-1342- Hindus -and-Others/ 2015/07/26/ article2940289.e ce
অপরাধ করে পার পেয়ে গেছে এমন মুসলমানের সংখ্যা আদৌ কম নয়। অস্ত্র রাখার অপরাধে সঞ্জয় দত্ত কে জেলখানায় থাকতে হয় অথচ খুনি সলমন খান দিব্বি সিনেমা করে কোটি টাকা কামাচ্ছে; ইয়াকুব কে নির্দোষ দাবি করে নিজের জাত চেনাচ্ছে। তবে তো হিন্দুদের বলা উচিত ছিল, মুসলমান বলেই সলমনের বিচার হল না। কিন্তু কোনো হিন্দু এমন দাবি করেনি বরং সলমনের মুক্তি চেয়েছিল সবাই। হিন্দুরা যে মুসলমানদের মত চরম হিন্দুবিদ্বেষ তথা সাম্প্রদায়িকতা লালন করে না; এর চেয়ে বড় প্রমাণ আর কি হতে পারে?
গান্ধী কে হত্যার অপরাধে নথুরাম গডসে কে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। তখন তো কেউ বলেনি, নথুরাম হিন্দু তাই তাকে ফাঁসি দেওয়া হল। মেনন কে ফাঁসি দেওয়ায় যারা চিৎকার করে গুজরাত দাঙ্গায় হিন্দুদের বিচার চায়ছেন তারা আগে গোধরায় ট্রেনে শতশত তীর্থযাত্রী পুড়িয়ে মারার বিচার চান।
ইয়াকুব মেনন অপরাধ করেছে তাই তার যোগ্য শাস্তি হয়েছে। এখানে দুঃখ পাবার যেমন কিছু নেই তেমনি আনন্দিত হওয়ার মত কিছু দেখছি না। বরং আমাদের এখন বাকি দুই অপরাধীর একই পরিণতি চাওয়া উচিত। কম্যুনিস্ট এবং মানবতাবাদী বুদ্ধিজীবীদের নগ্ন মুসলিম তোষণের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানো উচিত। কারা আসলে সাম্প্রদায়িক; হিন্দু নাকি মুসলমান? তা সকলকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া উচিত।
No comments:
Post a Comment