Wednesday, 29 July 2015

Radical নারীবাদ

র্যাডিক্যাল নারীবাদ : দুইটি দৃষ্টিকোণ থেকে উত্তর দিতে চাইছি প্রথমত, Radical শব্দটি যদি আপনি ঋণাত্মক ভাবে নেন তবেই প্রশ্ন উঠবে, উগ্র নারীবাদে আসলে কী ক্ষতি হয়? আদতেই প্রায়োগিক অর্থে ক্ষতি কার? কারণ আমি জ্ঞানত এই পর্যন্ত কাউকে উগ্র নারীবাদের বলি হতে দেখিনি। এরপর প্রশ্ন উঠতে পারে, কি ধরণের কথা কিংবা মতবাদকে, আমরা Radical বলছি??? একজন তসলিমা নাসরিনের উদ্ধৃতি দিয়েছেন--[//নাম নিচ্ছিনা তবে যিনি পৃথিবীর কোন পুরুষের স্পার্মকে তার যোগ্য মনে করেন না তাঁকে র্যাডিক্যাল না বলেও পারা যায় না!//] আমি যদি এই কথাটিকে Radical ধরি, তাহলে আমার মতে ভুল হবে। কারণ তসলিমা তার জায়গা থেকে ভুল বলেননি। তিনি যাদের সংস্পর্শে এসেছেন তার মধ্যে, যে তাকে সমান ভাববে, এমন পুরুষ দেখেননি। আমি নিজের কথা বলি, যখন তার "নির্বাচিত কলাম" বের হয় তখন সেটি ছিল আমার মনোজগতে নাড়া দেয়া প্রথম বই। আমি নিজের কাছে ছোট হয়ে গেছিলাম, এই ভেবে যে আমি নিজেও প্রতি নিয়ত আমার মা বোন বান্ধবীদের কোনো না কোনো ভাবে পুরুষতান্ত্রিক মনভাব জাহির করছি, চাপিয়ে দিচ্ছি। সুবিধা ভোগ করছি, নিজের পুরুষ হবার। শুধুমাত্র আমার একটি শিশ্ন আছে বলে। এই অন্যায় Advantage আমার সব অর্জনকে ছোট করে দিত, এখনো দেয়। আমার বান্ধবীদের সামান্য অর্জন কি কষ্ট করে অর্জন করা সেটা আমি দেখেছি। আমার পরিবারে আমার মাকে দেখছি। অন্যানদের দেখেছি। আমি সেদিন থেকেই সেই বইয়ে করা একটি কথাকে মিথ্যা প্রমাণ করতে চাইতাম। যে আসলেই এমন পুরুষ আছে, যে নারীকে পদে পদে ছোট করে না। এটা এখনো আমার নিরন্তর চেষ্টা। আমার স্ত্রীর কাছে, আমি প্রতিনিয়ত নিজেকে প্রমাণ করতে চাই। কিন্তু বিশ্বাস করুন এখনো পর্যন্ত পারিনি। পুরুষতান্ত্রিকতার ব্যাপ্তি এত বিশাল আর এত সুক্ষ ও গাঁঢ়, যে, আমি চাইলেও এর থেকে পুরোপুরি বের হতে পারছি না। অথচ আমি কিন্তু সচেতন ভাবেই চাইছি। সেই জায়গায়, এই পার্থক্যগুলি যে একেবারে স্বচ্ছভাবে দেখেন তার জন্য, ঠগ বাছতে গাঁ উজার হবার মত অবস্থাই হবে। তাই তসলিমা খুব ভুল বলেননি। এটি উন্নাসিকতা নয়, একেবারে সত্য কথন। আর ব্যক্তিগত কথাকে, নারীবাদের সাথে মেলানোরও কিছু নেই। এবার দ্বিতীয় আঙ্গিকে বলি। আজকের বিজ্ঞান এমন জায়গায় পৌঁছে গেছে, যেখানে নারী, চেষ্টা করলেই পুরুষদের বাদ দিয়েই এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে পারে। তারা নিজেদের, পুরুষদের থেকে, একেবারে আলাদা হয়েই থাকতে পারে। নিজেদের জন্য পুরুষশুন্য পৃথিবীর দাবী করতে পারে। তারা কিন্তু তা করছে না। যেকোনো মতবাদ নিয়ন্ত্রিত বিপ্লবের পরিণতি কিন্তু প্রায় অবসম্ভাবীভাবে তার বিপরীত মতবাদের পতন কিংবা নিজের নিশ্চিহ্ন হবার মধ্যেই শেষ হয়। নারীবাদ কিন্তু শুধু পুরুষতন্ত্র বাদ দেয়ার কথা তুলেছে। পুরুষ বাদ দেয়ার কথা বলছে না। এবার আমি একটি Radical কথা বলি। আজকে যদি মেয়েরা, আমাদের উপর ২০০ বছর ঠিক উল্টো কায়দায় নির্যাতন চালায় তবেও আমাদের সেই নৈতিক জায়গা নেই, তার প্রতিবাদ করার। কারণ এই সভ্যতা নারীদের উপর নিষ্পেষণ চালিয়েই আজকের জায়গায় এসেছে। সেই নির্যাতন এখনো চলমান। সেই বৈষম্য এখনো বর্তমান। তারা যদি তাই একটু উগ্র কথাও বলে, সেটা শুধু তাদের সামান্য এগিয়ে রাখবে তাদের ক্ষেত্র প্রস্তুত করার জন্য। -- Pratim Firakh

No comments:

Post a Comment