Wednesday, 29 July 2015

সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা কোথায়?

পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামে এক হিন্দু পরিবারের জমি জোরপূর্বক দখল করে চাষ করেছে প্রতিপক্ষ। চাষের সময় যাতে বাধা দিতে না পারে সে জন্য প্রায় ২৫-৩০ জন সন্ত্রাসী দিয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ওই হিন্দু পরিবারটিকে জিম্মি করে রাখা হয়। গত বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনা জানার পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য ঘটনাস্থলে তার প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন। সূত্র জানায়, কেশবপুর ইউনিয়নের কেশবপুর মৌজার ১৫৮১নং খতিয়ানের ৬০৫২নং দাগের ৪১ শতাংশ জমি নিয়ে শংকর ধূপির সঙ্গে প্রতিপক্ষ হাবিবুর রহমান সিকদার ও আমির হোসেন মোল্লাদের দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলে আসছিল। সর্বশেষ চলতি বছরের ১১ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি আ.ওয়াহাবের নেতৃত্বে বিচারপতি সামসুদ্দিন মানিক ও বিচারপতি ঈমান আলীর সমন্বয়ে গঠিত একটি বেঞ্চ শংকর ধূপির পক্ষে রায় দেন। ওই রায় পাওয়ার পর প্রতিপক্ষরা নানাভাবে শংকর ধূপিকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে দেশ ত্যাগের জন্য হুমকি দিয়ে আসছে। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে হাবিবুর রহমান সিকদারের ছেলে আনোয়ার সিকদার ও আমির হোসেন মোল্লার ছেলে রাসেল মোল্লার নেতৃত্বে ২৫-৩০ জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে শংকর ধূপির পরিবারের লোকদের জিম্মি করে দুটি ট্রাক্টর দিয়ে ওই জমি চাষ করে। শংকর ধূপি মোবাইল ফোনে এ ঘটনা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করলে তিনি ঘটনা পর্যবেক্ষণের জন্য সেখানে প্রতিনিধি পাঠিয়েছেন বলে জানান। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলা নির্বাহী কমকর্তার প্রতিনিধি ঘটনাস্থলে আসার আগেই তারা জমি চাষ করে ফেলেন। উল্লেখ্য, শংকর ধূপির প্রায় ৪ একর জমি দখল করার জন্য স্বাধীনতার পর থেকেই প্রতিপক্ষরা শংকর ধূপিসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা- মোকদ্দমা দিয়ে হয়রানি করে আসছে। প্রতিপক্ষের লোকজন জামায়াত- শিবিরের সমর্থক হয়েও ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় এ ঘটনা ঘটিয়েছে। আবার, দেবহাটার পারুলিয়াতে প্রকাশ্যে তপন কুমার বিশ্বাস নামের এক সংখ্যালঘূ পরিবারের মালিকানাধীন ও দখলীয় কোটি টাকার সম্পত্তিতে সাইনবোর্ড ও তালা ঝুলিয়ে জবরদখল করেছে এলাকার প্রভাবশালী সন্ত্রাসীরা। ভুক্তভোগী তপন কুমার বিশ্বাস পারুলিয়া বাসস্ট্যান্ডের রুচিরা রেষ্টুরেন্টের মালিক। বৃহষ্পতিবার সকালে জনসমাগম পারুলিয়া বাসষ্ট্যান্ড সম্মূখের কোটি টাকা মূল্যের জমিটি সদলবলে দখল করে নেয় এসব সন্ত্রাসীরা। এঘটনায় রোববার দেবহাটা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী তপন কুমার বিশ্বাস। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, বিগত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে পারুলিয়া বাসষ্ট্যান্ড সম্মূখের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রুচিরা রেষ্টুরেন্ট সংলঘœ পারুলিয়া মৌজার এসএ ৩৭৬৪ খতিয়ানের ৩৬৫২ দাগের কোটি টাকা মূল্যের ৪শতক জমি রেকর্ড সূত্রে মালিকানাপ্রাপ্তহয়ে গোডাউন ঘর নির্মাণ ও ভাড়া দিয়ে (বর্তমান এমআর ফিস) ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন তপন কুমার বিশ্বাস। কিন্তু গত বৃহষ্পতিবার আকস্মিকভাবে সদর উপজেলার থানাঘাটা গ্রামের আবুল কাশেমের পুত্র শেখ মেহেদী হাসান উত্তম ও পারুলিয়ায় স্থানীয় আবুল হোসেন ওরফে খোকন শেখের পুত্র পলাশ, মৃত এনায়েত আলীর পুত্র শেখ আবুল হোসেন, মৃত আশু মাষ্টারের পুত্র শেখ তাজুল ইসলাম, মৃত কালিপদ ঘোষের পুত্র চিত্ত ঘোষ ওরফে চিত্ত আমিন, নূর আলী কারিকরের পুত্র নূরজামান ওরফে হোলা, মৃত রুস্তম গাজীর পুত্র ও চাঁদাবাজীসহ বহু অভিযোগে অভিযুক্ত খায়রুল ইসলাম ওরফে কাটা খায়রুলসহ অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা ব্যবসায়ী তপন কুমারের উক্ত কোটি টাকার সম্পত্তিতে অনধিকার প্রবেশ পূর্বক দরজায় তালা ও সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে জবর দখল করে নেয়। পাশাপাশি সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করলে ব্যবসায়ী তপন কুমার ও তার পরিবারের সদস্যদের খুন জখম করা হবে বলেও হুমকি দিতে থাকে। কিন্তু দখলকারী এসব সন্ত্রাসীরা প্রভাবশালী হওয়ায় নিজের রেকর্ডীয় ও মালিকানাধীন কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তিটি দখলমুক্ত করতেও ব্যপকভাবে বাঁধা ও হুমকির সম্মূখীন হচ্ছে সংখ্যালঘু এ পরিবারটি। তাছাড়া এসকল এসব দখলকারীদের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে এধরণের বহু অভিযোগ রয়েছে বলেও একাধিক বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। এঘটনায় ভুক্তভোগী সংখ্যালঘু ব্যবসায়ী তপন কুমার বিশ্বাস বাদী হয়ে বিষয়টির আইনী প্রতিকার চেয়ে রোববার এসব সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে লিখিত আবেদন জানিয়েছে। তাছাড়া যাতে করে তার মালিকানাধীন কোটি টাকা মূল্যের রেকর্ডীয় এ সম্পত্তিটি পুনরুদ্ধার ও এসব সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় সেজন্য সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে দাবি জানায় ভুক্তভোগী পরিবারটি। খবরসূত্রঃ bd times 24

No comments:

Post a Comment