ইসলাম অভিযোগ করে... হিন্দু ধর্ম পৌত্তলিকতা দোষে দুষ্ট। বিষয়টা কি আসলে তাই?
হিন্দু ধর্মের মূল কথা হলো তাদের ঈশ্বর এক ও অদ্বিতীয়, প্রয়োজন অনুসারে বহু রূপে আত্মপ্রকাশ করেন। যে মানুষ তাকে যে ভাবে ডাকে ঈশ্বর ঠিক সেভাবেই তার কাছে ধরা দেন। যদি কোন সত্যিকার ঈশ্বর থেকে থাকে আসলে হওয়ার কথাও তো তাই। কেউ ঈশ্বরকে বন্ধু ভাবে চাইতে পারে , কেউ সন্তান হিসাবে, কেউ বা স্বামী হিসাবে। ঈশ্বরের যদি এভাবে তার ভক্তের ইচ্ছা পূরণের ক্ষমতা না থাকে তাহলে সে কিসের ঈশ্বর?
ধরা যাক, এক লোক তাকে বন্ধু হিসাবে চাইল কিন্তু অন্য তার ভাই ঈশ্বরকে পিতা হিসাবে কামনা করল। সে ক্ষেত্রে ঈশ্বর একই সাথে দুই সহোদর ভাইয়ের সাধ কিভাবে মিটাবে ? এটা একমাত্র সম্ভব ঈশ্বর যদি বহু রূপ ধারন করেন। মুনকার নকির নামক দুই ফিরিস্তা যদি একই সাথে দুনিয়ার সাতশ কোটি মানুষের দুই কাঁধে বসে তাদের কাজ কাম লিখে রাখতে পারে, ঈশ্বর কেন পারবে না, দুনিয়ার মানুষ যে যেমন করে তাকে চাইবে সেভাবে তার কাছে ধরা দিতে? যদি তা না পারে বা না করে সেটা তাহলে ঈশ্বরের অক্ষমতা।
হিন্দুদের যে শত কোটি দেব দেবী আছে এগুলো সেই এক ঈশ্বরের বহুরূপ ছাড়া আর কিছু নয়। হিন্দুরা যার যার সুবিধা মত তার আরাধ্য দেব দেবী নির্ধারন করে তার পূজা করে। আবার যদি কেউ চায় সে শুধুমাত্র পরম ঈশ্বরেরও উপাসনা করতে পারে। ওপর থেকে দেখলে মনে হয় মূর্তি পূজা করছে। কিন্তু বিষয়টা মোটেও তা নয়। ওরা আরাধ্য দেবতাকে সামনে রেখে তার মধ্যে জীবন্ত দেবতার কল্পনা করে, মাথা নত করে। মাথা নত করার সময় মনে মনে ভাবে তার আরাধ্য দেবতা তাকে দেখছে। সে তার সামনের দেব-দেবীর মূর্তিকে জড় পদার্থ মনে করে না। যে কারনে তার অন্তরের সাথে তার আরাধ্য দেবতার একটা মিলন ঘটে, আরাধ্য দেবতাকে সে হৃদয়ে অনুভব করতে পারে। এটাই একজন ভক্ত হিন্দুকে চরম আনন্দ প্রদান করে যা সে শুধু নিজেই অনুভব করে, অন্যকে প্রকাশ করতে পারে না।
বিষয়টাকে মনোবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে যেভাবেই ব্যখ্যা করা হোক না কেন, হিন্দুদের ধর্ম ঠিক এরকমই।
ইসলাম শুধু উপর দিয়ে দেখে উপহাস করে বলে হিন্দুরা মূর্তি পূজা করে।সেখানে ইসলামের আল্লাহ এরকম বহু রূপ ধারন করতে পারে না, অন্তত: কোরান হাদিসে তার কোন উল্লেখ নেই। আর তাই সে তার ভক্তের কামনা বাসনা মিটাতে অক্ষম। একই সাথে এক ব্যক্তি একই সময়ে বিচারক ও দয়ালু হতে পারে না।
কোন বিচারক একজন ক্রিমিনালকে বিচার করে সঠিক ভাবে ফাঁসির রায় দিলে সেটা তার চুড়ান্ত ন্যয় বিচার হতে পারে কিন্তু তখন তিনি আ র অভিযুক্তের প্রতি দয়ালু থাকেন না। সুতরাং একই সাথে আল্লাহ কিভাবে তার সৃষ্ট কোটি কোটি মানুষের বিচার করে কাউকে ফাঁসি, কাউকে করুনা করে একই সময়ে সবার প্রতি পরম ন্যয় বিচারক ও দয়ালু থাকেন ? এটা সম্ভব শুধুমাত্র আল্লাহ বহু রূপ ধারন করে তখনই। ইসলামের আল্লাহর এ ধরনের বহু রূপ ধারনের ক্ষমতা নেই। আর সে কারনেই দেখা যায় কোরানে আল্লাহর প্রকৃত রূপ হলো – একজন ভীষণ রাগী, ক্রুদ্ধ, হিংস্র, প্রতিশোধ পরায়ন কোন অস্তিত্বের , তার মধ্যে ভালবাসা, করুনা, ক্ষমার কোন লক্ষন দেখা যায় না। যদিও মাঝে মাঝে উল্লেখ আছে সে নাকি ক্ষমাশীল কিন্তু তার রাগ ও হিংস্রতার কথা যদি ৫০ বার উল্লেখ করা হয়েছে তো ক্ষমাশীলতার কথা বলা আছে মাত্র ১ বার। অর্থাৎ সার্বিক ভাবে কোরানের আল্লাহ একজন হিংস্র কোন জন্তু বা জীব। পরম করুনাময় সৃষ্টি কর্তা নয় কোনমতেই। একারনেই সম্ভবত কোন মুসলমান ইসলামের সব ধরনের বিধান অনুসরণ করেও কখনো আল্লাহর সাথে নৈকট্য অনুভব করে না।
যেহেতু ইসলামের আল্লাহর তার ভক্তের সাধ পূরনের কোন ক্ষমতা নেই, তাই এ ধরনের রূঢ় ও ক্রুদ্ধ সৃষ্টিকর্তার কোন অস্তিত্ব থাকতে পারে না, থাকলেও সেটা ঈশ্বর না হয়ে হবে নিশ্চিত ভাবে শয়তান। কারন শয়তানই একমাত্র এভাবে ক্রুদ্ধ ও হিংস্র হতে পারে কোন পরম করুণাময় ঈশ্বর নয়। আর হিন্দুদের ঈশ্বর জগতের সব জায়গাতেই বিরাজমান, তাই তাদের কোন নির্দিষ্ট কিবলার দরকার পড়ে না। যে কোন দিকে বসেই তারা তাদের ঈশ্বর বা দেব দেবীকে ডাকতে পারে।
ইসলামের আল্লাহর এ বিষয়ে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আল্লাহ শুধুমাত্র কাবা নামক একটা দালান ও তার ভিতরের কাল পাথরের দিকে না তাকিয়ে ডাকলে সে কোন ডাক শোনে না, যদিও সে তার মধ্যে বাস করে না। এভাবে জড় বস্তুর প্রতি মাথা নত করতে বা জড় বস্তুকে পুজা দেয়ার জন্য মানুষকে প্ররোচিত করে তাদেরকে বিভ্রান্ত ও বিপথে নিয়ে যাওয়ার চক্রান্ত করতে পারে একমাত্র শয়তান , কোন সৃষ্টিকর্তা নয়। হিন্দুদের ঈশ্বর তাই এ ধরনের শয়তানের প্রভাব মুক্ত।
ReplyDeleteহিন্দু ধর্ম পৌত্তলিকতা মোহাম্মদ মোটেই বুঝতে পারে নি, অত গভীরে বোঝার মত যে বিদ্যা ও জ্ঞান থাকা দরকার মোহাম্মদের তা ছিল কি?
...... স্বর্নেন্দু বিশ্বাস......