•☆☆☆☆ইতিহাস••••---------------------ভারতের উওরে অবস্থিত 84,471 বর্গমাইল এলাকা বিশিষ্ট কাশ্মীর রাজ্যটি আন্তর্জাতিক দিক থেকে অতি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।এই রাজ্যটির পশ্চিমে পাকিস্তান,দক্ষিনে ভারত,উওর পূর্বে তিব্বত,উওরে চীনা তুর্কীস্থান এবং উওর পশ্চিমে সোভিয়েত ইউনিয়ন দ্বারা পরিবেষ্টিত।এই রাজ্যের শাসক হিন্দু কিন্তু প্রজাদের অধিকাংশ মুসলিম ধর্মাবলম্বী।ইঙ্গো শিখ যুদ্ধের ফলে ব্রিটিশ অধিকারে আসে অঞ্চল টি রণজিৎ সিং এর কাছ থেকে।অত্যন্ত দূর্গম ও উপজাতি প্রধান এলাকা বলে ব্রিটিশরা এ অঞ্চল গুলাব সিং নামে এক জনৈক কে এক কোটি টাকার বিনিময়ে বেচে দেয়।ব্রিটিশরা চুক্তি করে নেয় এটি ব্রিটিশ অধীনস্থ রাজ্য বলে পরিগণিত হবে।
••☆☆প্রাচীন শাস্ত্রে কাশ্মীর------------- "কাশ্মীর" মানে হল "শুষ্ক ভূমি"(সংস্কৃতেঃকা = জল এবং শীমিরা = শুষ্ক)। দ্বাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে কলহন-এর লেখা কাশ্মীরের ইতিহাস "রাজতরঙ্গিণী" থেকে জানা যায় যে কাশ্মীর উপত্যকা পূর্বে একটি হ্রদ ছিলো। হিন্দু পুরাণে বর্ণনা করা আছে সৃষ্টির দেবতা ব্রহ্মার পৌত্র মহাঋষি কশ্যপ বারামূলা(বরাহমূল) পাহাড়ের একাংশ কেটে হ্রদের জল নিষ্কাশন করেন। কাশ্মীর সম্পূর্ণ শুকিয়ে যাওয়ার পর কশ্যপ ব্রাহ্মণদের সেখনে বসতি স্থাপন করা্র জন্য আমন্ত্রণ করেন। এই কাহিনী স্থানীয় ঐতিহ্যে আজও রয়ে গেছে, এবং এই অঞ্চলের ভৌগোলিক অবস্থাও অনেকটাই সমর্থন করে । কশ্যপের সাথে হ্রদ নিষ্কাশণের যোগাযোগ ঐতিহ্যগত ইতিহাসেও পাওয়া যায়,যা বোঝা যায় উপত্যকায় বসবাসকারীদের প্রধান শহরের নাম "কশ্যপ-পুরা" থেকে, যার উল্লেখ আছে হেকাটেউস লেখায় কাস্পাপাইরস বা হেরোডোটাসের লেখায় কাস্পাটাইরস নামে। টলেমি তাঁর লেখা কাশ্মীরকে "কাস্পেইরিয়া" নামে নির্দেশ করেছেন। ষষ্ঠ শতাব্দীতে ভারতে আসা চীনা পরিব্রাজক হিউয়েন সাং-এর লেখা জানতে পারা "কাশ-মি-লো" রাজ্যের কথা যার অস্তিত্ব ছিল প্রথম শতাব্দী থেকে ।
○○•☆☆•কাশ্মীর নিয়ে পরস্পর বিরোধী প্রস্তাব--------------------পাক-ভারতের স্বাধীনতার প্রাক্কালে লর্ড মাউন্টব্যাটেন কাশ্মীরের তৎকালীন শাসক মহারাজা হরি সিং কে ভারত বা পাকিস্তান কোন একটি রাষ্ট্রে যোগদান করার পরামর্শ দেয়।উভয় রাষ্ট্র থেকেই অনুরূপ আবেদন আসে।কাশ্মীরের প্রধান রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল কনফারেন্স এর সভাপতি শেখ আবদুল্লা কাশ্মীরের ভারত ভুক্তির পক্ষে জনমত গঠন করতে থাকেন।মহারাজা হরি সিং মনে করতেন -কাশ্মীর যেহেতু ভারত পাকিস্থান সীমান্তে অবস্থিত তাই কাশ্মীর স্বাধীন ও স্বতন্ত্র থাকলে উভয় দেশেরই ভৌগলিক অখণ্ডতা বা সংহতিতে বাধা হবে না।
○○○•••☆☆কাশ্মীরে পাকিস্থানী আক্রমন------------1947 খ্রীষ্টাব্দে 22 শে অক্টোবর পাক- মদতপুষ্ট পাঠান ও অন্যান্য উপজাতিদের নিয়ে গঠিত হানাদার বাহিনী কাশ্মীরে ঢুকে পরে ব্যপক গনহত্যা,লুণ্ঠন ও নারী নির্যাতন চালাতে থাকে।তাদের সাথে একযোগে পাকিস্তান সেনাবাহিনীও কাশ্মীরে ঢুকে পড়ে।উভয় বাহিনী উরী,বারমূলা প্রভৃতি স্থান দখল করে 26 শে অক্টোবরের মধ্যে রাজধানী শ্রীনগরের 40 মাইলের মধ্যে এসে পৌছায়।কেবলমাএ এই নয়-------কাশ্মীরের উপর অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে পাকিস্তান থেকে সকল পণ্য সরবরাহ নিষিদ্ধ হয়।তখন একমাএ পাকিস্থানের সাথে কাশ্মীরের সড়ক যোগাযোগ ছিল।যাই হোক পাক হানাদারদের আক্রমনে কাশ্মীরে চূড়ান্ত অব্যবস্থা দেখা যায়,প্রশাসন ভেঙে পড়ে এবং মহারাজা নিজেই পলায়ন করে রাজধানী শ্রীনগর থেকে।
○○○○☆☆ভারতভুক্তিতে মতামত---------------কাশ্মীরের ভারতভুক্তির আবশ্যিকতা সম্পর্কে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভাতে দ্বিমত ছিল। বল্লভভাই প্যাটেল কাশ্মীরের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে আগ্রহী ছিল না।কিন্তু নেহেরু মনে করতেন ভারতের ঐক্য ও অখণ্ডতার জন্য কাশ্মীরকেও ভারতের সাথে যুক্ত করা আবশ্যিক।
☆☆☆☆কাশ্মীরের ভারত ভুক্তি------------------এমত কাশ্মীরের উওপ্ত অবস্থায় মহারাজ হরি সিং 24 শে অক্টোবর ভারতের কাছে সামরিক সাহায্য প্রার্থনা করলে ভারত সরকার জানায়,মহারাজ "ভারত ভুক্তির দলিলে " স্বাক্ষর করলে তবেই ভারত কাশ্মীরে সেনা পাঠাতে পারে-অন্যথায় নয়।26 শে অক্টোবর মহারাজ হরি সিং ভারত ভুক্তির দলিলে স্বাক্ষর করে এবং শেখ আবদুল্লার নেতৃত্বে কাশ্মীরের সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় দল ন্যাশনাল কনফারেন্স তা সমর্থন করে। 27 শে অক্টোবর প্রায় 100 টি বিমানে ভারতীয় সেনাবাহিনী শ্রীনগরে অবতরণ করে।মাএ 2 দিনে পাক হানাদার ও পাক সেনাবাহিনী কে চুড়ান্ত ভাবে পরাস্ত করে ভারতীয় সেনা।কাশ্মীরের দুই তৃতীয়াংশ দখল করে ভারতীয় সেনা।31 শে অক্টোবর ভারতীয় বাহিনীর ছএছায়ায় কাশ্মীরে আপৎকালীন শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠীত হয়।শেখ আবদুল্লা সরকারের বিরোধীতা করে পাকিস্থান তার দখলিকৃত কাশ্মীরে " আজাদ কাশ্মীর" নামে একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করে এবং ভারত ভুক্ত কাশ্মীরের উপর নানাভাবে সামরিক আক্রমণ চালাতে থাকে।শুরু হয় কাশ্মীর সমস্যা।
☆☆☆☆জাতিপুঞ্জে কাশ্মীর সমস্যা------------- সংঘর্ষ এড়ানোর জন্য লর্ড মাউন্টব্যাটেনেরপরামর্শে জওহরলাল নেহেরু রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে কাশ্মীর প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন এবং কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে রাষ্ট্রসংঘের হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করেন।ভারতের যুক্তি ছিল---------------------°°°°°°°
●●হানাদার রা পাকিস্থান থেকে কাশ্মীরে প্রবেশ করেছে।তাই তাদের নারস্ত্র করার দায়িত্ব পাকিস্থানের।
●●কাশ্মীরের মহারাজা ভারত ভুক্তির দলিলে স্বাক্ষর করে ভারত রাষ্ট্রে যোগ দিয়েছেন।তাই কাশ্মীরের উপর পাকিস্থানের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যেকোন রকম হস্তক্ষেপ অবৈধ।
●●ভারত মনে করে যে কাশ্মীরের জনসমর্থন ভারতের পক্ষেই আছে।কারন কাশ্মীরের জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল কনফারেন্স ভারত ভুক্তির সমর্থক।
●●ধর্মনিরপেক্ষ ভারত রাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে কোন দেশীয় রাজ্যের ধর্মীয় ভিত্তি বিচার করা অবাঞ্ছনীয়।অবশ্যপাকিস্থানের প্রতিনিধি জাফরুল্লা খাঁ ভারতের সকল যুক্তি নাসাৎ করে দেন এবং মুসলিম এলাকা কাশ্মীর কে হিন্দু প্রধান ভারত রাষ্ট্রের অধিকার অন্যায্য বলে দাবি করেন।
■বর্তমানে ভারতীয় কাশ্মীর মূলত তিনটি ভাগে বিভক্ত, জম্মু,কাশ্মীর আর লাদাখ। জম্মু ও লাদাখ হিন্দু ও বৌদ্ধদের আবাসস্থল আর কাশ্মীর হল মুসলিমদের আবাস্থল। জম্মু আর লাদাখের জনগন ভারতে থাকার পক্ষপাতী। অন্যদিকে কাশ্মীরের একপক্ষ চায় স্বাধীনতা।
ReplyDelete■■এখনও পর্যন্ত 4 বার ভয়াবহ যুদ্ধ হয়েছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে
●ভারত-পাকিস্তানযুদ্ধ ১৯৪৭
● ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৬৫
● ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৭১
● ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ ১৯৯৯
প্রত্যেক বারই চূড়ান্ত পরাজিত হয় পাকিস্তান।
■■■■■■■■■■■১৯৬৫সালে ভারত-পাক যুদ্ধ শুরু হয় । ১৯৬৬ সালের ১০ ই জানুয়ারী বর্তমান রাশিয়া তাসখন্দ চুক্তির মাধ্যমে সে যুদ্ধের নিষ্পত্তি ঘটাতে সক্ষম হলেও ১৯৭১ সালে আবার তারা যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।
ॐ卐 প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অন্যতম কারন ছিল সাম্রাজ্যবাদ।পাকিস্থান ভারতের অংশ দখল করে বর্তমান যুগেও সাম্রাজ্যবাদ এর নিদর্শন রাখে।অপরদিকে চীন ও ভারতের বৌদ্ধ রাজ্য অরুনাচল প্রদেশ কে দখল করার ইচ্ছা প্রকাশ ইঙ্গিত দেয় সাম্রাজ্যবাদের।বর্তমানে ভারতের নিজস্ব আকসাই প্রদেশ চিনের দখলে। বিশ্বের চারটি ধর্মের পীঠস্থান হল ভারত-----হিন্দু,বৌদ্ধ,শিখ,জৈন।এই চারটি ধর্মে ভারতভূমিকে তাদের পবিত্র তীর্থস্থান বলে উল্লেখ করে।এইজন্য চীন ভারত আক্রমন করলে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী দেশগুলি নিন্দা করে চীনের।
এ সময় সোভিয়েত এর সাথে আফগানদের বিরোধ লাগলে পাকিস্তান আফগানদের সহযোগিতা করলে এসময় সোভিয়েত ইউনিয়ন ভারতের সাথে একটি ভাল সম্পর্কের ভিত্তিতে ভারতকে পারমানবিক অস্ত্র নির্মানে সহযোগিতা করে। পাকিস্তান একই সুযোগে চীনের সহযোগিতায় পারমানবিক অস্ত্রে তৈরী করে। 1974 এ ভারত প্রথম পারমানবিক অস্ত্র পরীক্ষা করে।পাকিস্থান করে 1998 এ।☆☆
চারটি ধর্মের পবিএ ভূমি ভারতবর্ষ।আক্ষরিক অর্থে ভারত তাই ধর্মনিরপেক্ষ।মুসলিম প্রধান কাশ্মীর যদি পাকিস্থানের দাবী মত হয় তাহলে ওদের লজিক অনুযায়ী হিন্দু প্রধান সিন্ধু প্রদেশ অবশ্যই ভারতের।কিন্তু ভারত তা বলে না।মূলত কাশ্মীর সমস্যার জন্যই পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্থানের মানুষ আজও ভারতের ক্ষতি করে জঙ্গী কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে সঙ্গে ভারতীয় সংস্কৃতির অপপ্রচার সোশাল সাইটে।
কারন বিশ্বকবি তার নিজের দেশ ভারত সম্পর্কে বলেছেন-------------------------
নানা ভাষা,নানা মত, নানা পরিধান;
বিবিধের মাঝে দেখ মিলন মহান ।